শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোট নিয়ে দুই সিটিতে দুই সুর

খুলনায় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বড় দুই দলে ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনায় কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বড় দুই দলে অভ্যন্তরীণ ক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার পর তা বাতিল করায় প্রতিবাদ সমাবেশ আহ্বান করেছে মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ‘পকেটের লোককে প্রার্থী করা হয়েছে’ মন্তব্য করে সংগঠনের পক্ষ থেকে নির্বাচনে ভোট বর্জনের হুমকি দিয়েছেন নেতারা।

অন্যদিকে বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কাউন্সিলর পদে একাধিকবার নির্বাচিত ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. মুনিরুজ্জামান, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনিছুর রহমান বিশ্বাষ (প্যানেল মেয়র), ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কে এম হুমায়ুন কবির ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মুহা. আমানউল্লাহ আমান দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন। এতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা। এ ব্যাপারে কেন্দ্র থেকেও খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।দলীয় সূত্র জানায়, গত ৯ এপ্রিল কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড ২৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ ঘোষের নাম ঘোষণা করে। তিনি ওই ওয়ার্ডে আগেও দুবার দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করেছেন। কিন্তু ১১ এপ্রিল রাতে প্রার্থিতা পরিবর্তন করে এই ওয়ার্ডে ফয়েজুল ইসলাম টিটোকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এ সময় সংরক্ষিত ৮ আসনে হালিমা ইসলামকে পরিবর্তন করে কনিকা সাহাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এর আগে ১০ নম্বর ওয়ার্ডে নগর যুবলীগ নেতা কাজী তালাত হোসেন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে রাজুল হাসান রাজু, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে জিয়াউল ইসলাম মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তবুও এরা প্রত্যেকে দলীয় প্রার্থীর বাইরে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।  বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও খুলনার নেতারা তাদের পকেটের লোককে প্রার্থী করতে আমাকে বাদ দিয়েছেন। এতে আমার সংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খুলনায় আমাদের সংগঠনের ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোট রয়েছে। এই অপমানের প্রতিবাদে প্রয়োজনে সিটি নির্বাচনে ভোট বর্জন করার সিদ্ধান্ত হতে পারে।’  বিএনপির দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়া নগর বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিএনপির নির্বাচিত সব কাউন্সিলরকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নেতাদের কাছের লোককে প্রার্থী করে আমাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। খুলনায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে আমি সব থেকে বেশি নির্যাতিত হয়েছি, সবচেয়ে বেশি মামলার আসামি হয়েছি। তার প্রতিদানে আমাকে বাদ দেওয়া হলো।’ তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে একাধিকবার মুঠোফোনে মনোনয়নের ব্যাপারে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। আমি স্থানীয় রাজনীতি সম্পর্কে তাদের জানিয়েছি।’ তবে দলের এসব ক্ষোভ সম্পর্কে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো সিদ্ধান্তেই সব পক্ষকে সন্তুষ্ট করা যায়নি।’ আর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এমপি বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নির্বাচন করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর