শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

জৌলুস হারিয়েছে হালখাতা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

শুভ হালখাতা আজ। ঐতিহ্যের ধারায় এবারও দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের আধার বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা হালখাতা পালন করছেন। তবে মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবসায়ী এ ঐতিহ্যের ধারায় যুক্ত রয়েছেন। বাকিদের কাছে এর জৌলুস অনেকটাই হারিয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলা নববর্ষে পুরনো হিসাবের খাতা বাদ দিয়ে নতুন খাতায় হিসাব শুরু করার প্রথা চলে আসছে। বছরের শুরুতে হিসাব হালনাগাদ করার এ রীতি ব্যবসায়ীদের কাছে ‘হালখাতা’ নামে পরিচিত। নতুন হিসাব শুরু করার প্রাক্কালে ব্যবসায়ীরা গ্রাহকদের মিষ্টি মুখ করারও একটা আনুষ্ঠানিকতা আছে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। করা হতো সাজসজ্জাও। কিন্তু সেই হালখাতার জৌলুস এখন আধুনিকতা ও প্রযুক্তির কাছে মার খাচ্ছে। এখন বাইন্ডিং করা বড় আকারের লাল খাতায় আর হিসাব, লেনদেন রক্ষিত হচ্ছে না। বরং এসব আয়-ব্যয় এখন আশ্রিত হয়েছে প্রযুক্তিতে। কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট, মোবাইল কিংবা এ জাতীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে ব্যবসার সব কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে। লেনদেন করা হচ্ছে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে। লালখাতা প্রস্তুতকারীরাও এখন বিকল্প উপার্জনের পথ খুঁজছেন।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, ‘চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আসাদগঞ্জ মিলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যবসায়ী আছেন। এর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ ব্যবসায়ী হালখাতা পালন করছেন। অধিকাংশই এখন কম্পিউটার, ল্যাপটপ নির্ভর হয়ে গেছেন। কার্যত যারা তৃণমূল ও আড়তদারের সঙ্গে ব্যবসা করেন তারাই হালখাতা করেন। তবে ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হালখাতা উৎসব টিকিয়ে রাখা উচিত।’

রেয়াজুদ্দিন বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নগরের বৃহত্তম এই বাজারে ছোট-বড় মিলে প্রায় ১০ হাজার দোকান আছে। কিন্তু অতীতের মতো অনেকেই এখন আর হালখাতা করেন না। প্রযুক্তির জয়জয়কার অবস্থার কারণে হালখাতা এখন প্রায়ই পালিত হয় না।’

টেরি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, ‘দেশের অন্যতম বৃহত্তম থান কাপড়ের জন্য বিখ্যাত এই বাজারে ছোট-বড় প্রায় সাত হাজার দোকান আছে। অতীতে ঘটা করে হালখাতা পালন করা হলেও এখন আর সেই জৌলুস নেই। আধুনিকতার কাছে ক্রমেই হেরে যাচ্ছে এই ঐতিহ্য।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর