বুধবার, ১৮ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

চিহ্নই নেই বুড়িগঙ্গার শাখা নদীটির

নদীমাতৃক বাংলাদেশ। অথচ অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে নদী। নদী বাঁচাতে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ২২তম পর্ব আজ।

বাদল নূর

চিহ্নই নেই বুড়িগঙ্গার শাখা নদীটির

রাজধানীর কামরাঙ্গীর চরে বেড়িবাঁধ সংলগ্ন বুড়িগঙ্গার শাখা নদীটির এখন কোনো চিহ্নই নেই, পুরোটাই বিলীন হয়ে গেছে। নদীর দুই তীরে গড়ে উঠেছে পেট্রল পাম্প, বস্তিঘর, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, গাড়ির স্ট্যান্ড, কারখানা, ডেইরি ফার্ম, ব্রাশ ফ্যাক্টরি, আবাসিক ভবন এবং দোকান ঘর। কোথাও বাঁশের ঘর বানিয়ে দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবার কোথাও ময়লা ফেলে অথবা মাটি ভরাট করে নদীটি দখল করা হচ্ছে। জানা গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে এই নদীটি দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। দখলকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বেড়িবাঁধ ঘেঁষে বাণিজ্যিক ভবন আর আবাসিক ভবন তুলেছেন। আবার কেউ নদীর জমি দখল করে রাখার পর তা অন্যত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন। স্থানীয়দের অনেকে পৈত্রিক সম্পত্তি বলে দাবি করে জমির প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও তৈরি করে নিয়েছেন। তাই দখলকৃত জমি বিক্রি করতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি তাদের। এসব জমি বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন স্থানীয়রা। যারা তুলেছেন বাণিজ্যিক ভবন তারাও ব্যবসায়ীদের কাছে পজেশন বিক্রি করছেন। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটি এর সচিব কাজী অখিল নেওয়াজ সম্প্রতি বলেন, নদী রক্ষার ব্যাপারে আমরা আন্তরিক। যেখানেই নদী দখল হচ্ছে, সেখানেই আমাদের অভিযান চলছে। তিনি বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু অসাধু লোক নদী দখল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। আমরা নদী রক্ষার জন্য সীমানা পিলার বসাচ্ছি। সীমানা পিলার পেরিয়ে কোনো ব্যক্তি দখল করে স্থাপনা তৈরি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা বস্তিঘর বানিয়ে দখল প্রক্রিয়া শুরু করে। জমি দখলের পর সব কিছুই নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাদের। কারণ প্রতিবাদ করতে কেউ সাহস পায় না। বি আই ডব্লিউটিএ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বিভিন্ন সময় অভিযান চালালেও শেষ পর্যন্ত নদীটি রক্ষা করতে পারেনি। অভিযানের দু-চার দিন পরেই আবার দখল হয়ে যায়। জানতে চাইলে ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার হুমায়ুন কবির বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তি নদী দখল প্রক্রিয়ায় জড়িত। নদীটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। দখলকারী যতবড় শক্তিশালী হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা এবং হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাইমেন বয়ান বলেন, বুড়িগঙ্গার এই শাখা নদীটি বিলীন হওয়ায় হাজারীবাগ, লালবাগ এবং কামরাঙ্গীর চর এলাকার ড্রেনের বর্জ্য ও ময়লা পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে করে এলাকার ড্রেনগুলো ময়লা বর্জ্যে ভরপুর হয়ে থাকে। আর একটু বৃষ্টি হলেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। রাস্তায় জমে হাঁটু পানি। দুর্গন্ধ ছড়ায় পুরো এলাকায়।

সর্বশেষ খবর