রবিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাজ শেষ হবে কবে

চার বছরে ব্যয় বেড়েছে ৪০০ কোটি টাকা

নিজামুল হক বিপুল

ইন্টারকন্টিনেন্টালের কাজ শেষ হবে কবে

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কারকাজ এখনো শেষ হয়নি —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের অন্যতম পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কারকাজ চার বছরেও শেষ করা যায়নি। দফায় দফায় সময় এবং ব্যয় বাড়লেও কবে নাগাদ হোটেলটির সংস্কারকাজ শেষ হবে এবং সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে তা এখনো অনিশ্চিত। সংস্কারকাজ শুরুর সময় প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২০ কোটি টাকা। কিন্তু চার বছরে সেই ব্যয় ৪০০ কোটি টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২০ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হোটেলটির সংস্কারকাজ শুরু হয়েছিল। ১৬ মাসের মধ্যেই এ কাজ শেষ করার কথা ছিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। কিন্তু সবকিছুই এখনো অন্ধকারে। যদিও বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী আগামী ১৫ জুনের মধ্যে হোটেল খুলে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

চেইন হোটেল শেরাটনের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের পর পাঁচ তারকা এ হোটেলটি পরিচালনার জন্য ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে চুক্তি হয় বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের (বিএসএল)। এর আগে দুই বছর ‘রূপসী বাংলা’ নামে হোটেলটি পরিচালনা করে বিএসএল নিজেরাই। এরপর ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে হোটেলের সংস্কারকাজ শুরু হয়। ১৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার শর্তে তিনটি প্রতিষ্ঠান পৃথক প্যাকেজে কাজ পায়। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। ২০১৬ সালের জানুয়ারি এটি উদ্বোধনের কথা ছিল। কিন্তু ১৬ মাস তো দূরের কথা, বাস্তবতা হচ্ছে গত প্রায় চার বছরেও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কারকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নবম গ্লোবাল ফোরাম অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (জিএফএমডি) সামিটের জন্য অফিশিয়াল হোটেল ছিল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় হোটেলটি ব্যবহার করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

এরপর আরও বেশ কয়েকবার হোটেলটি খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিবারই সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে হোটেলটি খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন হোটেলের জেনারেল ম্যানেজার জেমস পি ম্যাকডোনাল্ড। কিন্তু সেই সময়সীমায়ও হোটেলটি চালু করা যায়নি। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত হোটেলটির সংস্কারকাজ শেষ হয়নি। এখনো হোটেলের অনেক কাজ বাকি। এদিকে হোটেলটি খুলে দেওয়ার বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী এ কে এম শাহজাহান কামাল মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে জানিয়েছিলেন, মে মাসের মধ্যেই হোটেলটি খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু মন্ত্রীর সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা করা সম্ভব হবে না বলে হোটেলসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। ওই সূত্রের মতে, আগামী ডিসেম্বরের আগে কোনোভাবেই হোটেলটি খুলে দেওয়া সম্ভব হবে না। কারণ ভিতরের কাজ এখনো বাকি। বিশেষ করে রান্নাঘর, রেস্টুরেন্ট ও বেনকুয়েট হলের কাজ এখনো চলছে। এর বাইরে কক্ষের ইন্টেরিয়র ও সুইমিংপুলের কাজও চলমান। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে হোটেল খুলে দেওয়ার জন্য কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর