গত শুক্রবার বেলা ২টার দিকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন কাজী মাহবুুবুর রহমান। ১৩৫টি সোনার বারভর্তি একটি ব্যাগ তিনি বিমানেই ফেলে আসেন। তবে পরে সন্ধ্যার দিকে গিয়ে গেট থেকে ওই ব্যাগটি নিয়ে আসেন মাহবুব। র‌্যাবের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল— ব্যাগ নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরছেন। মাহবুবকে তার বাড়ি থেকে ভোর ৪টার দিকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী বিকাল ৫টার দিকে ওই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার করা হয় সাড়ে ১৩ কেজি সোনাসহ ব্যাগটি। কথাগুলো বলছিলেন র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম। রাজধানীর উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর, ১১ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর বাসা থেকে সাড়ে ১৩ কেজি চোরাই সোনাসহ গ্রেফতার দুজন হলেন কাজী মাহবুবুর রহমান (৪৫) ও তার সহযোগী মীর জাকির হোসেন (৫০)। র‌্যাব বলছে, এরা দুজনই আন্তর্জাতিক সোনা চোরাকারবারি চক্রের সদস্য। র‌্যাব বলছে, ট্র্যাভেল এজেন্সির ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরেই সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত মাহবুব। প্রতি মাসে সোনার তিনটি চালান আসত। প্রতি কেজিতে মাহবুবের কমিশন ১ লাখ টাকা। গত ছয় বছরে তিনি হয়েছেন বিপুল সম্পদের মালিক। জব্দ ১০০ গ্রাম ওজনের ১৩৫টি সোনার বারের বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা। র‌্যাব-১-এর সিও বলেন, অনেক দিন ধরেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ফাঁকি দিয়ে সোনাসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান করে আসছিলেন মাহবুব। এবার আর রেহাই মেলেনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি তার ছয়টি ট্রাভেল এজেন্সি ও ডলারের ব্যবসা রয়েছে বলে জানিয়েছেন। এগুলোর বিষয়ে তদন্ত করা হবে। সিও আরও বলেন, মাহবুব দুবাইয়ের সোনা চোরাচালান সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হতো, তিনি তাই বাস্তবায়ন করতেন। দেশে সোনার চালান আসার পর তার দায়িত্ব ছিল খুচরা বাজারে বিক্রি করা। জাকিরের দায়িত্ব ছিল দোকানে দোকানে সোনা পৌঁছে দেওয়া। এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের সিও বলেন, মাহবুবের প্রতিটি তথ্যই যাচাই করা হবে। জড়িতদের অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। মাহবুবের বাড়ির দারোয়ান ইউনুস সাহাবুল্লাহ জানান, তিন মাস ধরে মাহবুবের স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে আমেরিকায় আছেন। ২০১০ সালে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর সড়কের ১২ নম্বর বাড়ির এ ফ্ল্যাটটি কেনেন মাহবুব।