শিরোনাম
শনিবার, ১২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
ঢাকা ঘোষণা ‘অন্যায্য’ : মিয়ানমার

রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার : কারমান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের নির্যাতনকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক তাওয়াক্কল আবদেল-সালাম কারমান। সেই সঙ্গে বলেছেন, রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল, দুঃখজনক হলেও সত্য, তা তারা করেনি। গতকাল চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। নগরীর একটি হোটেলে ‘টিকে থাকার জন্য টেকসই উন্নয়ন : একটি ন্যায়সঙ্গত পৃথিবী গড়তে চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক  সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এইউডব্লিউয়ের দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা কামাল আহমদ। সম্প্রতি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন ২০১১ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী তাওয়াক্কল কারমান। রোহিঙ্গা শিবিরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ইয়েমেনের এ মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘দুই মাস আগে নোবেল বিজয়ী শিরিন এবাদিসহ আমি রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছি। ওই সময় প্রায় ১০০ নারীর কথা শুনেছি। তাদের প্রায় প্রত্যেকেই বলেছে, তাদের চোখের সামনেই তাদের মা-বাবা, ভাইবোন, সন্তানদের জবাই ও গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের ওপর যা হয়েছে, তা গণহত্যা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, রোহিঙ্গা বিষয়ে বড় কোনো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

ওআইসির ঢাকা ঘোষণা ‘অন্যায্য’ : রোহিঙ্গা ইস্যুতে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) ঢাকা ঘোষণাকে অন্যায্য দাবি করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। ঘোষণায় রাখাইন পরিস্থিতি বর্ণনায় ব্যবহূত ‘জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও রাষ্ট্রীয় মদদে সহিংসতা’ শীর্ষক শব্দগুলোও অস্বীকার করেছে মিয়ানমার।

গত বুধবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে মিয়ানমারের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতি।

উল্লেখ্য, গত ৫ ও ৬ মে ঢাকায় ওআইসির ৪৫তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের আলোচনায় প্রধান বিষয় ছিল রোহিঙ্গা সংকট। বৈঠক শেষে দেওয়া ৩৮ দফার ঘোষণায় চারটি ঘোষণা ছিল রোহিঙ্গা ইস্যুতে। ওআইসির ঘোষণায় বলা হয়, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপরে নিরাপত্তা বাহিনীর কাঠামোবদ্ধ সহিংসতার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ওই ঘোষণায় ‘উপর্যুপরি হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের কারণে প্রতিবেশী দেশে হাজার হাজার মানুষের পালিয়ে যাওয়াকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করা হয়। ঘোষণার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওআইসির ঘোষণায় ভারসাম্য ও নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে। কারণ তা উত্তর রাখাইনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির সহিংস আক্রমণের নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাখাইনের বর্তমান মানবিক সংকট তৈরি করেছে ওই সশস্ত্র গ্রুপটি। বিবৃতিতে বলা হয়, খুবই অনুশোচনীয় যে ঢাকা ঘোষণায় রাখাইনের বাস্তুচ্যুত মানুষদের জরুরি প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ নেই। বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হলেও জাতিসংঘ বলছে এখনো প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত নয় মিয়ানমার।

সর্বশেষ খবর