শনিবার, ১২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

সন্দেহের তালিকায় ভাই-বোন-স্বামী

নিজস্ব প্রতিবেদক

সন্দেহের তালিকায় ভাই-বোন-স্বামী

পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী শাহানা আলম বিউটি খুনের রহস্য উদঘাটন হচ্ছে না। কোনো ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ। সন্দেহের তীর ভাই ও বোনদের দিকে থাকলেও তাদের এখনো গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তবে সন্দেহের তালিকা থেকে তার স্বামী পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেনও বাদ নেই। সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের ধারণা, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটতে পারে। আর বিউটির সঙ্গে তার ভাই কামরুল ও বোন রোকসানার দ্বন্দ্ব ছিল বলে জানা গেছে।

দারুস সালাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেলিমুজ্জামান এ প্রতিবেদককে জানান, ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা। আমাদের সন্দেহের তীর তার ভাই-বোনের দিকে। সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুনটি হয়েছে বলে প্রাপ্ত তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিহতের স্বামী তিনজনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পৈতৃক সম্পদ নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে।

বিউটির ছোট ভাই কামরুল আলম খান বাবু, ছোট বোন রোকসানা আলম খান ঋতু ও তার স্বামী রইছ উদ্দিনকে ঘটনার পরপরই কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। একই বাসায় থাকতেন ঋতু ও তার স্বামী-সন্তান।

গত রবিবার রাতে বিউটির স্বামী পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কামাল হোসেন দারুস সালাম থানায় মামলা করেছেন। এতে কাউকে সরাসরি অভিযুক্ত না করলেও ওই তিনজনের নাম রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই এনামুল হক জানান, দুই দিকে তদন্তে দৃষ্টি রাখছেন তারা। ভাই-বোনদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়টি ছাড়াও স্বামী কামালকেও সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন। এ খুনের নেপথ্যে কামালের দ্বিতীয় সংসারের পর দাম্পত্য কলহের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

জানা গেছে, বিউটিকে যে বাড়িতে হত্যা করা হয়েছে সেটি জেলা পরিষদের (সরকারি) জমি ইজারা নিয়ে তৈরি করেন তার বাবা শামসুল আলম খান। প্রায় ৮০ বছর বয়সী এই ব্যক্তি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। সম্প্রতি তিনি ছোট মেয়ে রোকসানা আলম খান ঋতুর নামে জমিটির ইজারার মালিকানা স্থানান্তর করেন। তিন-চার মাস ধরে বিউটি ওই বাড়ির একটি কক্ষে থাকা শুরু করেন। তাদের একমাত্র ভাই কামরুল আলম খান বাবু টাঙ্গাইলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন। বাবার বাড়িটি নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। বিউটি ছিলেন নিঃসন্তান। এ কারণে তার পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী পরে আরেকটি বিয়ে করেন। এ নিয়েও দাম্পত্য কলহ ছিল। 

গত শনিবার মিরপুরের দারুস সালাম থানা এলাকার লালকুঠির একটি বাড়ি থেকে শাহানা আলম খান বিউটির হাত-পা বাঁধা এবং মুখে স্কচটেপ লাগানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি ধানমন্ডির ৭ নম্বরে সানিডেল স্কুলের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ছিলেন। আর ঘটনাস্থলটি বিউটির পৈতৃক বাড়ি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গৃহকর্মী দোলেনা বেগম বাসায় ঢুকে বিউটির লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে পুলিশ লালকুঠির তৃতীয় কলোনির ২৫২/১ নম্বর একতলা বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বিউটির লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস জানান, প্রাথমিকভাবে শ্বাসরোধে হত্যার আলামত মিলেছে। বিউটির গলায় কালো দাগ আছে।

সর্বশেষ খবর