শনিবার, ১২ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

একই জমিতে তিন ধরনের ধান চাষে আগ্রহ

সাইফুর রহমান রানা, বদরগঞ্জ (রংপুর)

একই জমিতে তিন ধরনের ধান চাষে আগ্রহ

একই জমিতে তিন ধরনের ধান বোরো আউশ ও আমন চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে বদরগঞ্জের কৃষকদের। একই জমিতে প্রথমে বোরো ধান পরে আউশ ও আমন চাষ করা হচ্ছে। তাতে ফলনও বেশ আশানুরূপ  হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে একটি জমির যেমন প্রকৃত ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে দেশ হচ্ছে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরেজমিন গত বুধবার উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউপির প্রান্তিক চাষিরা বোরো ধান কেটে ঘরে নেওয়ার পর ওই জমিতেই আউশ ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কথা হয় কালুপাড়া ইউপির কুমারপাড়া গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলামের সঙ্গে।

 তিনি জানান, বোরো ধান কাটার পর ওই জমিতে আউশ ধান চারা রোপণ করছি। আউশ ধান কেটে আবার ওই জমিতেই আমনের চারা রোপণ করব। তিনি আরও জানান, সরকার আউশ ধান চাষে বিনামূল্যে বীজ ও সার দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করছে। কথা হয় দামোদরপুর ইউপির জেলেপাড়া গ্রামের কৃষক নুরুন্নবী মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান কেটে আউশ ধানের চারা রোপণ করছি। আশা করছি, ওই জমি থেকে বছরে তিনবার ধান পাব। তিনি আরও জানান, আউশ ধানের ফলনও বেশ ভালো। একরপ্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ (৪০ কেজি) ধান পাওয়া যায়। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গোটা উপজেলায় প্রায় ১১৫ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৫০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে। বাকিটা খুব দ্রুতই শেষ হবে। আউশ ধানের জাতগুলো হলো— ব্রি ধান-৪৮, ব্রি ধান-৪৩, বিআর-২৬, হাইব্রিড, বিআর-৩, নেরিকা মিউটেন্ট প্রভৃতি। কৃষি অফিস সূত্রে আরও জানা যায়, ২০ দিন বয়সী চারা জমিতে রোপণ করা হয় এবং এই ধান ১০০ থেকে ১১০ দিনের মধ্যে কাটা সম্ভব। এ কারণে একই জমিতে আমন ধান রোপণ করতে কোনো সমস্যা হয় না। বদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক রায় জানান, একই জমিতে বছরে তিনবার ধান ফলাতে কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। এ কারণে সরকার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করছে। এতে কৃষকদের মাঝে আউশ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরও জানান, এই সময়ে রোপণকৃত ধানটি আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে কাটা যাবে। এতে করে আমন ধান রোপণে কোনো সমস্যা হবে না। বদরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবর রহমান জানান, এবার বোরোর সময়টাতে ব্রি ধান-২৮ এ জেলার অনেক জায়গায় নেক ব্লাস্ট রোগ দেখা দিলেও এ উপজেলায় কৃষি অফিসের সঠিক তদারকির কারণে কৃষকের ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, একই জমিতে তিনবার ফসল পেতে সরকারিভাবে কৃষকদের উৎসাহ প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ধানের বিভিন্ন রোগ দমনে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর