ঘর সাজানোর আধুনিক দৃষ্টিনন্দন সব ফার্নিচার নিয়ে  ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) চলছে মেলা। নানা ডিজাইন আর কারুকাজসমৃদ্ধ সব ধরনের আসবাব নিয়ে দেশীয় পণ্যের এক নান্দনিক সমাহারে পূর্ণতা পেয়েছে এ মেলা। দেশীয় কাঠ দিয়ে তৈরি বিশ্বমানের সব ডিজাইন নিয়ে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন  ধরনের আসবাব। গতকাল পঞ্চমবারের মতো চার দিনব্যাপী বাংলাদেশ ফার্নিচার অ্যান্ড ইন্টেরিয়র ডেকর (বিএফআইডি) এক্সপো শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, এফবিসিসিআইর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মোন্তাকিম আশরাফ প্রমুখ। উদ্বোধনী বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০২১ সালে ফার্নিচার খাত থেকে কমপক্ষে এক বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় করতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য এ খাতকে বড় করার জন্য যা যা করা দরকার সরকার তার সবকিছুই করবে। মন্ত্রী বলেন, এটা একটা উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় খাত। বর্তমানে সরকার এ খাতের পণ্য রপ্তানিতে ১৫ ভাগ নগদ সহায়তা দিচ্ছে। আমরা যে নতুন ১০টি পণ্য রপ্তানিতে গুরুত্ব দিয়েছি, ফার্নিচার তার একটি। যদিও বর্তমানে মাত্র ৫৩ মিলিয়ন ডলারের আসবাব রপ্তানি হচ্ছে। প্রথম দিন মেলায় গিয়ে দেখা গেছে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আসবাব। শুধু নিজের ঘর নয়, অফিস কক্ষ সাজানোর আসবাবের সমাহার বসেছে এই মেলায়। ঘর সাজানোর আসবাবের সঙ্গে দরজার নিরাপত্তার বিশেষ তালা, রং, টাইলস, কিচেন ইন্সট্রুমেন্টসহ নানা ধরনের পণ্য। প্রতিটি স্টলে খাট, চেয়ার, ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন সোফা, ইজি চেয়ার, ডাইনিং টেবিলসহ গৃহসাজের সব ধরনের আসবাব। গৃহের সাজসজ্জার জন্য রয়েছে দেয়াল রং, টাইলস সরঞ্জাম। মেলায় অংশ নিয়েছে ব্রাদার্স, রিগ্যাল, নাভানা, হাতিল, অ্যাথেনাসসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ফার্নিচার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। অ্যাথেনাসের তৈরি একটি ডাইনিং টেবিলের দাম ১৬ লাখ টাকা। আছে রিগ্যালের তৈরি দৃষ্টিনন্দন খাট, সোফা। একটি খাটের দাম ৬৫ হাজার টাকা। শৌখিন মানুষের জন্য ইজি চেয়ারের দাম ১২ হাজার টাকা। কাঠের আসবাবের সঙ্গে স্টেইনলেস স্টিলের পণ্যও রয়েছে। এসকেবি নিয়ে এসেছে এসব পণ্য। এসকেবির তৈরি বিভিন্ন ফার্নিচারের দাম ইজি চেয়ার সাড়ে পাঁচ হাজার, হ্যাঙ্গার এক হাজার ৯৫০ টাকা। মেডিকেল ট্রলি ২০ হাজার, সোফা ৩০ হাজার, ওয়ারড্রব ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছে তারা।

বিএফআইডি এক্সপো-২০১৮-এ মোট ১৯টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। এর মধ্যে ফার্নিচার খাতে ১০টি এবং হোম ফার্নিশিং খাতে ৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১৬ মে পর্যন্ত চলবে বিএফআইডি এক্সপো। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় অংশ নেওয়া ১৯টি প্রতিষ্ঠানের সবগুলো স্টলেই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এখান থেকে অর্ডার নিয়ে ঠিকানা অনুযায়ী পৌঁছে দেয় উৎপাদন প্রতিষ্ঠান। ফলে ক্রেতাদের কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে না। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় ফার্নিচার মেলার প্রধান উদ্দেশ্য দেশীয় ফার্নিচারের প্রচার এবং দেশি ও বিদেশি ক্রেতাদের ফার্নিচার পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে অবহিত করা। প্রতিবছর দেশের ফার্নিচার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ খাতকে আরও বেশি শক্তিশালী করার জন্য এ মেলার আয়োজন। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারছেন।