মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
মিতু হত্যাকাণ্ডের দুই বছর

সবাই চায় মুছার খোঁজ

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

সবাই চায় মুছার খোঁজ

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের দুই বছর আজ। মিতু খুনের কিলিং মিশনের মাস্টারমাইন্ড কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারের খোঁজ নেই কারও কাছে। পুলিশের দাবি, দুই বছর ধরে তারা খুঁজছেন তাকে। মুছার পরিবারের দাবি, ঘটনার পর পরই আটক করা হয় মুছাকে। আটকের পর থেকে হদিস নেই আলোচিত মুছার। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মুছার পরিবার তো অনেক কিছুই দাবি করতে পারেন। আমরা এখনো মুছাকে খুঁজছি।’ তিনি বলেন, ‘মুছাকে গ্রেফতার করা গেলে এ মামলার রহস্য উন্মোচিত হবে। মুছা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর।’ জানা যায়, মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া সব আসামিই স্বীকার করেছেন তাদের ভাড়া করেছেন বাবুল আকতারের ‘সোর্স’ মুছা সিকদার। মিতু খুনে ব্যবহার করা অস্ত্রের সরবরাহকারী এহতেশাম হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাও স্বীকার করেছেন মুছাই তার কাছ থেকে অস্ত্র ভাড়া নিয়েছেন। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়া আনোয়ার হোসেন ও মো. ওয়াসিম উল্লেখ করেছেন কিলিং মিশনে অংশ নেওয়ার জন্য তাদের ভাড়া করেছেন মুছা। মুছার স্ত্রী পান্না আকতার দাবি করেন, ‘২০১৬ সালের ২২ জুন নগরীর বন্দর থানা এলাকা থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ মুছাকে আটক করে নিয়ে যায়। একই সময় মুছার ভাইসহ কয়েকজনকে আটক করা হয়। কিন্তু বাকি সবাইকে গ্রেফতার করা হলেও মুছাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। মুছা যদি অপরাধী হন তাহলে বিচারের মাধ্যমে তার শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’ মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বলছি এ খুনের সঙ্গে বাবুল আকতারই জড়িত। মুছাকে দিয়েই বাবুল পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। মুছাকে প্রকাশ্যে এনে এ খুনের রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানাচ্ছি।’ ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের এক মাসের মধ্যেই এ খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ও অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়।

এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী। কিন্তু এক পর্যায়ে ‘অজ্ঞাত’ কারণে থমকে যায় তদন্তের গতি। ২০১৬ সালের ১ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের চালানো এক অভিযানে শাহজাহান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে মুছার ভাই সাইদুল আলম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আর কোনো সাফল্য পায়নি পুলিশ। এ ছাড়া একই বছর ২৮ জুলাই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা অস্ত্র মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২২ নভেম্বর এ মামলার বিচারও শুরু করে আদালত। অস্ত্র মামলার বিচার শুরু হলেও খুনের রহস্যের টিকিটিও ছুঁতে পারেনি পুলিশ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর