বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
মেডিকেল ছাত্রী হত্যা

ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ধরার পরেই দেখি মারা গেছে

তুহিন হাওলাদার

‘আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় আমি মিথীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ধরেছিলাম। একটু পরে দেখি মিথী আর কথা বলে না। নিশ্বাসও বন্ধ। যখন বুঝতে পারি ও আর নেই, তখন আমিও আত্মহত্যা করতে যাই। আমি মিথীকে খুব ভালোবাসতাম।’ এমনভাবেই মেডিকেল ছাত্রী সাউদিয়া আক্তার মিথী হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয় আসামি আরিফুল ইসলাম। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আসামির জবানবন্দি গ্রহণকারী বিচারকের সাক্ষে এসব বিষয় উঠে আসে। গত সোমবার মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। জাবানবন্দিতে আসামি আরিফুল বলেন, ‘ঘটনার দিন আমার মামা-মামির সঙ্গে আমি বাসার বাইরে যাই। তারপর আমার স্ত্রী মিথী আমাকে ফোন করে বলে বাসায় ফিরে আস, একটি চাকরির কথা-বার্তা হচ্ছে। আমি বাসায় আসলে আমার স্ত্রী বলে চাকরি কিছু না, রান্না কর। আমি রান্না না করে বসে ছিলাম। বিকালে সে পাউরুটি আর দুধ খেয়েছে। আমি ভাত খাই। মিথী ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমাচ্ছে।’ আরিফ জবানবন্দিতে আরও বলেছেন, ‘ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে মিথী ঘুম থেকে উঠে। ঘুম থেকে উঠে বলে আমি হোস্টেলে যাব। তাকে বাইরে যেতে না দিয়ে রুমে আটকে রাখি। এ সময় আমাকে সে বলে তুমি আমাকে ভালোবাস না। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মিথী তুসকা সিরাপ এক বোতল খেয়ে ফেলে। এ ছাড়া ওর কাছে থাকা ১২টি ঘুমের ওষুধও খায়। আমি ওর কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ৮টি ঘুমের ওষুধ খাই। রাত আনুমানিক ২টা বাজে, সে আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। তখন আমি তাকে ওর গলায় ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে ধরি। একটু পরে দেখি মিথী আর কথা বলে না। মারা গেছে। এরপর আমিও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলাম। আমি মিথীকে খুব ভালোবাসতাম। মামলা সূত্রে জানা গেছে, নিহত মিথী জেড, এইচ শিকদার ওমেন্স মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

 ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিথীর সঙ্গে ঝগড়া করে আসামি আরিফ রুমের দরজা বন্ধ করে উচ্চ স্বরে গান বাজিয়ে দেয়। তারপর হত্যা করা হয় মিথীকে। এ ঘটনায় মিথীর স্বামী আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিথীর বাবা আলহাজ আ. সালাম বাদী হয়ে রাজধানীর হাজারীবাগ থানায় ২০১৪ সালের ২ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন। পরে ঘটনার তদন্ত করে হাজারীবাগ থানার তৎকালীন এস আই মো. আ. হালিম খান একই বছর আরিফুল ইসলামকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন আছে। গত সোমবার মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। বিচারক মো. নূরুল আমীন বিপ্লব আগামী ২৮ আগস্ট মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর