বুধবার, ১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

গায়ক পাখি পাতি ফটিকজল

দীপংকর ভট্টাচার্য, শ্রীমঙ্গল

গায়ক পাখি পাতি ফটিকজল

পাতি ফটিকজল। ইংরেজি নাম Common Lora.  আর বৈজ্ঞানিক নাম Aegithina tiphia. এরা ইজিথিনিডি গোত্রের ছোট আকৃতির গায়ক পাখি। এরা বিভিন্ন সুরে ডাকতে পারে। দেশে কোথাও এরা চাতক কোথাওবা হলুদ টুনি নামেও পরিচিত। যদিও চাতক সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রজাতির আরেকটি

পাখি। একই ভাবে টুনি  গোত্রীয় পাখিদের সঙ্গেও এদের সম্পর্ক খুবই কম। পাখিবিষারদরা জানান, পাতি ফটিকজল মূলত হলুদ ও জলপাই রঙের। চড়ুই পাখির চেয়েও ছোট খুব চটপটে পাখি। এদের কালচে সবুজ ডানায় দুটি বড় সাদা পট্টি রয়েছে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি হঠাৎ করে শনাক্ত করা কঠিন।

সারা পৃথিবীতে ফটিকজলের ১১টি উপপ্রজাতি শনাক্ত করা গেছে।

প্রজননের সময় উপপ্রজাতিগুলোর মধ্যে গায়ের রঙ বদল হয়। তবে সব উপপ্রজাতির পুরুষ পাখির ডানা কালো ও গাঢ় লেজ দেখা যায়। স্ত্রী পাখির ডানা সবুজাভ আর লেজ জলপাই রঙের হয়। ঠোঁট ও পা সিসা নীল রঙের। চোখের তারা ফিকে হলুদ। পাতি ফটিকজলের দৈর্ঘ্য ১৪ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখির দৈর্ঘ্য একটু বেশি। শীতকালে পুরুষ পাখিদের রঙ একটু ফ্যাকাসে হয়ে যায়। এদের সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় বেশি দেখা যায়।

তবে ছোট ছোট দলে অন্যসব পাখির সঙ্গেও খাবার খুঁজে বেড়ায়।

এরা খাবারের সন্ধানে সারাক্ষণ লতাপাতা এবং ডালপালার মধ্যে বিচরণ করতে থাকে। মূলত কীটপতঙ্গ আর তাদের ডিম-বাচ্চা-শুককীট খেয়ে থাকে। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি থেকে বর্ষাকাল ও তার পরবর্তী সময়গুলো পাতি ফটিকজলের প্রজনন কাল। এ সময় স্ত্রী ও পুরুষ দুজনে মিলেই বাসা তৈরি করে। অন্য পাখিরাও পাতি ফটিকজলের বাসায় এসে ডিম পেড়ে যায়। তাই নিজেদের বাসা নিরাপদ রাখতে পাতি ফটিকজল তাদের বাসা থেকে কিছু দূরে আরেকটি অসমাপ্ত ডামি বাসা তৈরি করে।

এরা দুই থেকে তিনটি ডিম দেয়। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই ডিমে তা দেয়। ১৫ থেকে ১৮ দিনে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। ১৬ থেকে ১৯ দিনে বাচ্চা উড়তে শিখে। 

 সৌল (সেভ আওয়ার আনপ্রোটেক্টে লাইফ)-এর নির্বাহী পরিচালক তানিয়া খান বলেন, পাতি ফটিকজল সারা দেশেই রয়েছে। শুধু গ্রামীণ ঝোপঝাড় নয়, শহর এলাকায়ও এদের দেখা যায়। এরা এখনো বিপদমুক্ত। 

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর