বৃহস্পতিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে বর্তমান সাবেক এমপির বিরোধ

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

আওয়ামী লীগে বর্তমান সাবেক এমপির বিরোধ

কুষ্টিয়া-১ আসন আয়তনে কুষ্টিয়ার সবচেয়ে বড় উপজেলা। এ আসনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। দলের মনোনয়ন পেতে কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আহমেদকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী রেজাউল হক চৌধুরী। সেই থেকে এ উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত। দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে হানাহানি মারামারি লেগেই থাকে সারা বছর। এতে হতাশ দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এ বিরোধ না মিটলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে উপজেলা বিএনপি নেতাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই বললেই চলে। দলের তেমন কর্মকাণ্ড না থাকলেও উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চুর একক নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা পরিচালিত হচ্ছেন। তাই বিএনপি এখানে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে আছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৎপর বর্তমান সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরী। তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত। তবে ছোট ভাইদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য কিছুটা বেকায়দায় আছেন এই নেতা। জানতে চাইলে রেজাউল হক চৌধুরী বলেন, দলের একটি পক্ষের সঙ্গে বিরোধ থাকায় তার নামে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় রাস্তা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সেক্টরে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। তিনি মনোনয়নের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। অন্যদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আহমেদ এবার মনোনয়ন পেতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরা এই নেতা মনোয়নন পেতে কেন্দ্রে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। আফাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গত নির্বাচনে দল তাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। কিন্তু কৌশলে তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়। তবে দলের বেশিরভাগ নেতা-কর্মী তার পক্ষে বলে দাবি এই নেতার। এই দুই নেতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের ভাই আওয়ামী লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য রশিদুল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সরোয়ার জাহান বাদশা, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য মোফাজ্জেল হক এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চুকে  দলের একক প্রার্থী মনে করেন বেশির ভাগ নেতা-কর্মী। তবে ওয়ান-ইলেভেনের পর রেজা আহমেদ বাচ্চু রাজনীতি থেকে নিজেকে অনেকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ফলে এ আসনে ২০০৮ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আলতাফ হোসেনকে। অবশ্য বর্তমানে সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চুই বিএনপির হাল ধরে রেখেছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে না পারলেও তিনি দলের নেতা-কর্মীদের সংগঠিত রেখেছেন। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তার বিকল্প কাউকে ভাবছেন না। রেজা আহমেদ বাচ্চুর পাশাপাশি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদ সরকার মঙ্গল, আলতাফ হোসেন, রমজান আলী সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন। বড় দুই দলের বাইরে জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কোরবান আলীর ছেলে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফারিয়ার জামিল জুয়েল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ছাড়া উপজেলা জাসদের (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন নির্বাচন করবেন। এ উপজেলায় জামায়াতের ভোট নেই বললেই চলে।

সর্বশেষ খবর