বোধহীন সমাজ ব্যবস্থার গল্প নিয়ে গ্রুপ থিয়েটার মঞ্চায়ন করেছে দলটির ২৬তম প্রযোজনার সময়োপযোগী নাটক ‘বোধ’। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় নাটকটি। মুন্সী প্রেমচাঁদের গল্প অবলম্বনে স্বপন দাসের নাট্যরূপে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন মোস্তফা হীরা।

একটি বোধহীন সমাজে বাস করছে ঘিসু ও তার ছেলে মেধো। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে তারা পর্যুদস্ত। ক্ষুধা তাদের করে তুলেছে অমানবিক, স্বার্থপর ও পশুর মতো। বেঁচে থাকার লড়াইয়ে সম্পর্কের বন্ধন কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখে না তাদের জীবনে। তাই নাটকে দেখা যায় সামান্য কয়েকটি সেদ্ধ আলু নিয়ে পিতা-পুত্রের লড়াই। নিজের সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূর অতি সামান্য খাদ্য কেড়ে নিতে ঘিসু উদ্বুদ্ধ করে পুত্র মেধোকে। মেধোও বোধহীন এক জন্তুর মতো কেড়ে নেয় স্ত্রীর সেই সামান্য খাবার। ক্ষুধা তাদের এমনভাবে তাড়িত করে যে, নিজের পুত্রবধূকে মৃত ঘোষণা দিয়ে কিছু পয়সা পাওয়ার লোভ সামলাতে পারে না ঘিসু। পুত্র মেধোও তা সমর্থন করে। যে কোনোভাবে বেঁচে থাকাটাই যেন তাদের একমাত্র লক্ষ্য। অথচ কেন তারা আজ দরিদ্র, কেন পাচ্ছে না দু’মুঠো খাবার। এর জন্য এ সমাজ কতটা দায়ী। কেন তারা বৈষম্যের শিকার। এ নিয়ে ভাবে না তারা। এদের কি আর সম্পূর্ণ মানুষ বলা চলে? গল্পের শেষ দিকে নাটকের স্বপ্নের ঘোরে ঘিসু-মেধো বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। ঘেন্না করে এই সমাজ ও সমাজপতিদের। মেধো তার সন্তানকে বোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। এভাবেই এগিয়ে যায় ‘বোধ’ নাটকের কাহিনী। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মো. হাবীবুর রহমান, মঈনুদ্দীন হাসান খোকন, নাঈমা তালুকদার বন্যা, শাকিল আহমেদ, মাসুদ আলম বাবু প্রমুখ।