নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী ইপিজেডের সোয়াদ গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে। গতকাল সকাল ৭টায় আদমজী ইপিজেডের সামনে শিমরাইল-ইপিজেড-নারায়ণগঞ্জ সড়কে পাওনা আদায়ের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ বাধা দিলে শুরু হয় শ্রমিক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ও কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ও শ্রমিকদের লাঠিচার্জ করে। এ সময় শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের লাঠিচার্জে অর্ধশতাধিক শ্রমিক আহত হয় বলে অভিযোগ করে আন্দোলনরত শ্রমিকরা। অপরদিকে পুলিশের দাবি শ্রমিকদের হামলায় ১০ জন পুুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছে। পরে সকাল ৮টায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে পুনরায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় শ্রমিকরা ইপিজেডের শ্রমিক পরিবহনের অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে এবং একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেখান থেকে ৭ জন শ্রমিককে আটকের অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। শিল্প পুলিশ-৪ এর পরিচালক এসপি জাহিদুল ইসলাম জানান, সোয়াদ গার্মেন্টের শ্রমিকরা বকেয়া পরিশোধের জন্য সকাল থেকে ইপিজেডের সামনে অবস্থান নেয়। ইপিজেডের অন্য কারখানার শ্রমিকদের প্রবেশে বাধা প্রদান করে এবং শ্রমিকরা রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবদুস সাত্তার টিটু, পরিদর্শক (অপারেশন) আজিজুল হক, পুলিশ সদস্য শিবলিসহ দশজন পুলিশ আহত হয়। এদিকে বেলা ১১টায় নাসিক প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিক লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ বেপারী ও যুবলীগ নেতা হুমায়ুন কবিরসহ নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে বেপজা শিল্প পুলিশ ও সোয়াদ কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের জন্য ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। পরে প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান আশ্বাস দেন ১৫ নভেম্বর কর্তৃপক্ষ যদি বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করে তাহলে তিনি নিজেই শ্রমিকদের সঙ্গে রাস্তায় নামবেন তাদের দাবি আদায়ে। এ আশ্বাসের পর বেলা সাড়ে ১২টায় শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত করে।
সোয়াদ ফ্যাশনে কর্মরত আরিফ হোসেন জানান, কর্তৃপক্ষ আমাদের না জানিয়ে হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়। মালিক কারখানা বিক্রি করে দিয়েছে বলেও জানা গেছে। একই সঙ্গে ৪ বছরের ছুটি, ফান্ড ও রিজার্ভের টাকাও আমাদের পরিশোধ করা হয়নি। শ্রমিক মো. সবুজ জানান, আমরা বেপজার কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা বলছে, এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না।