বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকা-কলকাতা পর্যটন জাহাজ সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত

নয়াদিল্লি প্রতিনিধি

ঢাকা থেকে কলকাতা এবং আসামের গৌহাটি থেকে জোরহাট ভায়া বাংলাদেশ নদীপথে যাত্রী তথা পর্যটন জাহাজ সার্ভিস চালু করা হবে। গতকাল নয়াদিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের রূপনারায়ণ নদীর কোলাঘাট ও বাংলাদেশের চিলমারী নয়া পোর্ট অব কল (জলবন্দর) হওয়ার দরুন ভারত থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইঅ্যাশ-সিমেন্ট, নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহ সহজ হয়ে যাবে। নয়াদিল্লির লা মেরিডিয়ান হোটেলে গতকাল ভারত-বাংলাদেশ প্রটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট ও ট্রেডের (পিআইডব্লিউটিটি) উনিশতম স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারত সরকারের জাহাজ মন্ত্রণালয় থেকে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেওয়া এবং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) বিষয়ে দুই দেশ আজ চুক্তি স্বাক্ষর করবে। গতকালের বৈঠকে ভারতের নেতৃত্ব দেন অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান প্রবীর পান্ডে এবং বাংলাদেশের চেয়ারম্যানের পরিবর্তে যুগ্ম সচিব প্রমোদ কুমার বড়াল। এ বৈঠকে এসওপি বিষয়ে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে যে, অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহন ও সমুদ্রপথের যাত্রীবাহী ও পর্যটন জাহাজ চলাচল করবে। প্রথমে ঢাকা-কলকাতা এবং ব্রহ্মপুত্র হয়ে গৌহাটি ও জোরহাটের মধ্যে যাত্রী পরিবহন চলবে।

ভারত সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, উভয় দেশ সম্মত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রূপনারায়ণ নদীর গেয়োখালী থেকে কোলাঘাট পর্যন্ত প্রটোকল অন্তর্ভুক্ত হবে এবং কোলাঘাট হবে নতুন পোর্ট অব কল (জলবন্দর)। এর বিপরীতে বাংলাদেশের চিলমারী হবে পোর্ট অব কল। এর ফলে ভারত থেকে নদীপথে ফ্লাইঅ্যাশ-সিমেন্ট, নির্মাণসামগ্রী বাংলাদেশে সরবরাহ করা যাবে।

আরও সিদ্ধান্ত হয়েছে, আসামের করিমগঞ্জের সম্প্রসারিত পোর্ট অব কল হিসেবে বরাক নদীর বদরপুর এবং আশুগঞ্জের ঘোড়াশালকে শুল্ক বন্দর করা হবে। পারস্পরিক বিনিময়ের ভিত্তিতেই বাস্তবায়িত হবে। ভারতীয় পক্ষ আসামের শিলচর থেকে কলকাতা পর্যন্ত নতুন প্রটোকল রুট করার প্রস্তাব দিয়েছে। এ বিষয়ে আজ সিদ্ধান্ত হতে পারে।

এও সিদ্ধান্ত হয়েছে, আরিচা পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে রাজশাহী পরিটোকল রুট করার জন্য যৌথ কারিগরি কমিটি সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে এবং ভাগীরথী নদীর ওপর জঙ্গীপুর নৌপথের লক খোলার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তবে এটা করা হবে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির শর্তগুলো বিচার করে। এটা করা হলে আসামে যাওয়ার দূরত্ব ৪৫০ কিমি. কম হবে।

সিদ্ধান্ত হয়েছে আশুগঞ্জ-জকিগঞ্জ এবং সিরাজগঞ্জ-ডাইখোওয়ী নদীপথের ড্রেজিংয়ের জন্য প্রকল্প পরামর্শদাতা নিয়োগ করা হবে। এতে মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশ বহন করবে ভারত। এর জন্য একটি যৌথ তদারকি কমিটি গঠন করা হবে। বাংলাদেশের রপ্তানি ব্যয় কম করার জন্য ভারত কলকাতা ও হলদিয়া বন্দর ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ জানিয়েছে, সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

উভয় দেশ এও সম্মত হয়েছে, জোরহাট জাহাজের মাল খালাসের বন্দর হবে। এতে আসাম, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড পর্যন্ত পণ্য সরবরাহ করা যাবে। এ জন্য বাংলাদেশ শুল্ক বিভাগ মুন্সীগঞ্জকে টার্মিনাল বলে বিজ্ঞপ্তি দেবে, যাতে কলকাতা বন্দর দিয়ে পণ্য সরবরাহ করা যায়।

সর্বশেষ খবর