শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুবলার চরে রাস উৎসব

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

দুবলার চরে রাস উৎসব

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরের আলোরকোলে জমে উঠেছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব। পুণ্যার্থীদের আগমনে জমজমাট হয়ে উঠেছে উৎসব। আজ ভোরে সূর্যোদয়ের পর প্রথম জোয়ারে বঙ্গোপসাগরের নোনা পানিতে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী ঐতিহাসিক রাস উৎসব।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বলছে, বুধবার সকাল থেকে রাস উৎসবকে ঘিরে আগত পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে সাগরদ্বীপ আলোরকোল। আলোরকোলে রাস উৎসবে আগতদের যাতায়াতের জন্য সুন্দরবন বিভাগ ৮টি রুট নির্ধারণ করে দিয়েছে। এর মধ্যে শরণখোলা রেঞ্জের বগী স্টেশন-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন- কচিখালী-শেলারচর হয়ে আলোরকোল এবং শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন ও শেলারচর হয়ে আলোরকোলে পৌঁছায় পুণ্যার্থী ও পর্যটকরা। প্রত্যেক পুণ্যার্থী ও পর্যটককে ৩ দিন সুন্দরবনে অবস্থানের জন্য ৫০ টাকা, নিবন্ধিত ট্রলার ২০০ টাকা এবং অনিবন্ধিত ট্রলারের ৮০০ টাকা রাজস্ব ধরা হয়েছে। বাগেরহাটের পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা এবং বন ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় বন বিভাগের পাশাপাশি নৌবাহিনী, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, পুলিশের পাশাপাশি বনরক্ষীরাও নিয়োজিত আছেন।

 এছাড়া, কন্ট্রোল রুমে সার্বক্ষণিক একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তদারকির দায়িত্বে আছেন। এবার আলোরকোলে নারী পুণ্যার্থীদের পোশাক পরিবর্তনের জন্য আলাদা শেড ও পর্যাপ্ত টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দ্বীপ দুবলার চর আলোরকোলে ২৫০ বছরের অধিক সময় ধরে নভেম্বর মাসের রাস পুর্ণিমায় হিন্দুরা এই রাস উৎসব পালন করে আসছে। প্রথম দিকে এই উৎসবে কোনো নিয়ন্ত্রণ বা আইনি নিয়মনীতি মানা হতোনা। ‘৭৫ সালের পর বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে এবং সুন্দরবন মত্স্যজীবীদের সংগঠন দুবলা ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের ৯ নম্বর সেক্টরের সাবসেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে রাস মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। জিয়াউদ্দিনের মৃত্যুর পর গত দুই বছর ধরে বন বিভাগের মাধ্যমেই এই উৎসব পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর এখানে দেশি-বিদেশি লক্ষাধিক লোকের মিলনমেলায় পরিণত হয় সুন্দরবনের ৩ দিনের রাস উৎসব।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর