উত্তরবঙ্গের বৃহৎ বিল আশুরার বিল— এখানে এখন আর মাছ নয়, চলছে ধান চাষ। বিলের প্রায় অর্ধেকের বেশি এলাকাজুড়ে ধান চাষ করছেন কৃষক। এ বিলে শুকনো মৌসুমে ধান চাষ আর বর্ষাকালে মাছ চাষ হয়। তবে ঐতিহাসিক আশুরার বিলে পানি ধরে রাখতে একটি স্লুইসগেট এবং খননের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তদারকি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থাসহ খনন করলে এই আশুরার বিলে দেশীয় মাছ সংরক্ষণ, উত্তরবঙ্গে দেশীয় মাছের চাহিদা পূরণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে ও কমপক্ষে ১২০ মে. টন মাছ পাওয়া যাবে। অপরদিকে, কৃষকেরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ মৌসুমে বিঘাপ্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ ধান পাবেন তারা। খননসহ বিলের পূর্ব প্রান্তে পানি ধারণের জন্য একটি স্লুইস গেট বা রাবার ড্যাম স্থাপন করা গেলে শুষ্ক মৌসুমে পানি কমবে না। বর্ষা মৌসুমে এ বিলে লাল, সাদা শাপলা ফুলসহ বিলের সৌন্দর্য দেখে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ভ্রমন পিপাসুরা মুগ্ধ হয়।
এ কারণে বন বিভাগ থেকে এটিকে পর্যটকদের দর্শনীয় করতে পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। নবাবগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে সরকার ঘোষিত জাতীয় উদ্যান শালবনের কোল ঘেঁষে এ বিলের অবস্থান। বিলটি লম্বায় ৫ কিলোমিটার। আশুরার বিল নিয়ে রয়েছে পৌরাণিক বিচিত্র কাহিনী। অতি প্রাচীনকালে দেবতা ও অশুরদের মধ্যে লড়াই চলছিল আধিপত্য বিস্তার নিয়ে। সেখানে দেবতাদের নিকট অশুরেরা পরাজিত হয়েছিল। দেবতাদের খঞ্জরের আঘাতে অশুরদের ঝরা রক্ত তাদেরই পায়ে দেবে যাওয়া গর্তে ভরে গিয়েছিল বলে অশুরের বা আশুরার বিল নামকরণ করা হয়। অনেকে বলেন, ওই বিলের চারপাশ থেকে ৮০টি দ্বার বা নালা চতুর্দিকে ছড়িয়ে গেছে বলে আশি নালা নামের উৎপত্তি হয়েছে।