রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যত অনিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

উপাচার্য না থাকায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি এবং সিন্ডিকেট সভা হচ্ছে না এবং শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলাদলি চরমে উঠেছে। অভিযোগে জানা গেছে, প্রায় এক মাস উপাচার্যশূন্য থাকাবস্থায় গত ২৫ জুন উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পান ট্রেজারার অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান। এরপর থেকেই আগের ভিসির অনুসারী শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশকে শায়েস্তা করতে শুরু করেন তিনি। নিয়ম অনুযায়ী রুটিন উপাচার্য বেতন-ভাতাদি পরিশোধ ছাড়া প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা খরচ করতে পারবেন। কিন্তু তিনি গত ৪ মাসে পছন্দের বিভিন্ন ঠিকাদারকে প্রায় ১২ কোটি টাকার ঠিকাদারি বিল পরিশোধ করেছেন। গত রমজান মাসে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন অভিযানের উদ্বোধন করেন রুটিন ভিসি। কিন্তু পরিচ্ছন্নায় খরচ দেখিয়ে তিনি তার অনুগত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে তৎকালীন ভিসি ড. ইমামুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি তহবিলে ৬৭ লাখ  টাকা জমা রেখে যান। ভর্তি পরীক্ষা ইস্যুতে খরচের জন্য নতুন চেক বই তুলে ওই তহবিল থেকে রুটিন উপাচার্য লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য ছাড়া অন্য কেউ এ তহবিলের টাকা তুলতে পারবে না বলে নীতিমালায় রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, ভর্তি পরীক্ষার খরচ মেটাতে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু রুটিন উপাচার্য ভর্তি পরীক্ষার নামে মোটা অঙ্ক উত্তোলন করে এখন স্থায়ী উপাচার্য হওয়ার মিশনে নেমেছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা আরও জানান, আগামী ৬ অক্টোবর ট্রেজারার মাহবুব হাসানের ৪ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ¯œাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৮ ও ১৯ অক্টোবর। ভিসি কিংবা ট্রেজারার না থাকলে ভর্তি পরীক্ষাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এ সম্পর্কে অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, আগের ভিসিবিরোধী আন্দোলনে যারা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের নিয়ে ট্রেজারার সব সময় পরিকল্পনা করছেন। তিনি দালাল বেষ্টিত থাকেন। বিরোধী মত দমন করেন। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির সদস্য এবং বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস বলেন, আগের ভিসি চলে যাওয়ার পর আসলেই অভিভাবকহীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। ৬ মাস ধরে সিন্ডিকেট মিটিং নেই। উনার (ট্রেজারার) মেয়াদও আগামী ৬ অক্টোবর শেষ। উনারও অনেক কিছু করার পূর্ণাঙ্গ এখতিয়ার নেই। সার্বিক বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন উপাচার্য ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মাহবুব হাসান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় গতিশীল করাসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিবদমান গ্রুপগুলোকে একত্রিত করতে কাজ করেছি। ভর্তি পরীক্ষা তহবিল থেকে মাত্র ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা তুলে বিভিন্ন কমিটিকে দিয়েছি।’

সর্বশেষ খবর