সোমবার, ২ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনাভাইরাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি

করোনাভাইরাস

জয়শ্রী ভাদুড়ী

করোনাভাইরাস ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি

করোনাভাইরাস ঠেকাতে দেশজুড়ে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি। স্ক্রিনিং জোরদার করে রোগী শনাক্তে নেওয়া হয়েছে যাবতীয় ব্যবস্থা। দেশের প্রবেশদ্বার সব বন্দরেই নেওয়া হয়েছে রোগী শনাক্তের ব্যবস্থা। বাংলাদেশ বাদে চীনের প্রতিবেশী সব দেশেই ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত বিশ্বের ৬০টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর, রেলস্টেশন দিয়ে বাংলাদেশে আসা ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৯৫৮ যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৭০ যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। সমুদ্রবন্দরে ৪ হাজার ৩৩২ জনকে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টন ও বেনাপোল স্টেশনে ৩ হাজার ৯৯৫ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। অন্যান্য বন্দরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ২৯৩ যাত্রীকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। রোগী শনাক্ত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য তিনটি হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কুর্মিটোলা হাসপাতাল, সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কারও উপসর্গে করোনাভাইরাস দিয়ে সৃষ্ট রোগ কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মনে করলেই কুর্মিটোলা হাসপাতালে এনে টেস্টের ব্যবস্থা করছে আইইডিসিআর। তবে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী বাংলাদেশে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে কারও কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে আইইডিসিআরের হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করবেন। নম্বরগুলো হলো : ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯৩৭১১০০১১। এ পর্যন্ত হটলাইনে কল এসেছে ৩ হাজার ৩৪৭টি। আইইডিসিআর হটলাইন থেকে সেবা নিয়েছেন ১২৮ জন।

ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন। এই ভাইরাস সাধারণত প্রাণীতে রিজার্ভার হিসেবে থাকে, যা খুব সহজে মানুষে সংক্রমণ হয় না। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের মধ্যে সাত রকমের করোনাভাইরাস মানুষকে সংক্রমণে সক্ষম। তার মধ্যে চারটি করোনাভাইরাসে সাধারণ জ¦র, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা হয়। এগুলো ৫-৭ দিনে এমনিতে ভালো হয়ে যায়। এই চারটি হলো, ২২৯ই, এনএল৬৩, ওসি৪৩, এইচকে১। এ ছাড়াও আরও দুটি করোনাভাইরাস খুব সাম্প্রতিককালে মানুষে সংক্রমণ করেছে, এর মধ্যে একটি হলো সার্স অন্যটি মার্স। বিশ্ব পরিস্থিতি : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বিশ্বে সর্বমোট শনাক্তকৃত কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৬৫২ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৮ জন। মোট শনাক্তকৃত রোগীর মধ্যে চীনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯৬১ জন। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে মোট মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৮৫৮ জন। নতুন করে পাঁচটি দেশে রোগী শনাক্ত হয়েছে, বেলারুশ (১), লিথুয়ানিয়া (১), নেদারল্যান্ডস (১), নিউজিল্যান্ড (১), নাইজেরিয়া (১)। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম দুজন রোগী মারা গেছেন। সিঙ্গাপুর পরিস্থিতি : সিঙ্গাপুরে এ পর্যন্ত ৯৮ জন কভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৯ জনের পরিস্থিতি স্থিতিশীল এবং হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৯ জন। সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, সিঙ্গাপুরে মোট তিনজন বাংলাদেশের নাগরিক কভিড-১৯ সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে আছেন। তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। দুজন বাংলাদেশের নাগরিক সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

দক্ষিণ কোরিয়া পরিস্থিতি : দক্ষিণ কোরিয়ার সিডিসির সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পর্যন্ত কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯৩১ জন। কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর মধ্যে শারীরিক পরিস্থিতির উন্নতির কারণে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৭ জন এবং মারা গেছেন ১৬ জন।

করোনায় আক্রান্ত গুগলের কর্মী : সুইজারল্যান্ডে অ্যালফাবেট ইন করপোরেশনের অধীনে গুগলের এক কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গুগলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জুরিখের ওই অফিসে এক ব্যক্তির করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হলে সংক্রমণের বিষয়টি ধরা পড়ে।

সর্বশেষ খবর