সোমবার, ৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

নাদুস-নুদুস খুঁড়ুলে পেঁচা

দীপংকর ভট্টাচার্য লিটন, শ্রীমঙ্গল

নাদুস-নুদুস খুঁড়ুলে পেঁচা

খুঁড়ুলে পেঁচা, ইংরেজি : Spotted Owlet আর বৈজ্ঞানিক নাম Athene brama. এরা খুঁড়ুল পেঁচা বা কোটরে পেঁচা স্ট্রিগিডি পরিবারভুক্ত এক প্রজাতির ক্ষুদ্রাকার পেঁচা। এরা সাধারণত গাছের কোটরে বা খোঁড়লে বাসা বাঁধে বলেই এদের এমন নাম। তবে কখনো কখনো দালান- কোঠার ফাঁক-ফোকরে এদের বাসা বাঁধতে দেখা যায়। গত বুধবার শ্রীমঙ্গলের কালাপুর ইউনিয়নের মাইজদীহি পাহাড় গ্রামের আব্দুর রশিদের বাড়িতে ফুলের বাগানে জালে পেঁচাটি আটকা পড়ে। পরে তিনি জাল থেকে খুলে পেঁচাটিকে বাড়িতেই নিরাপদে রাখেন। আব্দুর রশিদ জানান, জালে আটকা পড়ায় পেঁচার পায়ে আঘাত পেয়ে পা ফুলে গেছে। খাদ্যাভ্যাস জানা না থাকায় তিনি পেঁচাকে খাবার দিতে পারেননি। বিশেষজ্ঞরা জানান, এরা দেখতে খুব নাদুস-নুদুস। এদের চোখের চারদিক ও গলা সাদা। চোখের তারা ফ্যাকাশে থেকে সোনালি হলুদ। শরীরের তুলনায় মুখ ছোট। পিঠের দিক গাঢ় বাদামি, তার ওপর সাদা রঙের ফোঁটা।

 মাথার উপরের ফোঁটাগুলো ছোট আকারের। পেটের নিচের সাদা আংশে  বাদামি রেখা দেখা যায়। বাদামি লেজে চিকন সাদা বলয় রয়েছে। এদের ঠোঁট সবুজ। পা ও পায়ের পাতা অনুজ্জ্বল হলদে-সবুজ। স্ত্রী ও পুরুষ দেখতে একই রকম।  দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৩ সেন্টিমিটার। এরা জোড়ায় জোড়ায়  থাকে। মাঝেমাঝে পারিবারিক দলেও থেকে থাকে। গোধূলি এবং কাকডাকা ভোরে এরা বেশি কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠে। ইঁদুর আর ছুঁচো এদের প্রধান খাবার। এ ছাড়া খাদ্য তালিকায় রয়েছে উড়ন্ত পোকা, টিকটিকি, বাদুড়, ছোট পাখি ও ছোট স্তন্যপায়ী। নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। তিন থেকে চারটি ডিম দেয়। গোলাকার ডিমগুলোর রং। ২৫ দিনে ডিম ফোটে। ৩০ দিনে ছানাদের গায়ে পালক গজায়। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মোনায়েম হোসেন বলেন, খুঁড়ুলে পেঁচা জালে আটকা পড়ার খবরটি আমার জানা নেই। এখন জেনেছি, উদ্ধারের জন্য লোক পাঠাচ্ছি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল এইচ খান বলেন, খুড়ুলে পেঁচা আমাদের দেশে কমন, এরা সংখ্যায় ভালোই আছে। এরা এখনো আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর