মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

জনজীবনে ছন্দপতন

কমেছে যানবাহন ও লোকসমাগম ঊর্ধ্বমুখী নিত্যপণ্যের বাজার

আলী আজম

বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। আক্রান্ত রোগীদের পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালে। মারাও যাচ্ছে। করোনা আতঙ্ককে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা লোকদের মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব কারণে রাজধানীর ব্যস্ততম রাস্তা ফাঁকা হয়ে গেছে। কমেছে যানবাহন ও লোকসমাগম। দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে জনজীবনে ছন্দপতন ঘটেছে। ইতিমধ্যে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। স্বস্তি ফিরেছে জনমনে। এর আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে গ্রামে চলে গেছেন। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো সরকারি ছুটি। করোনা আতঙ্ক থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সবাই নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন। এক থেকে দুই মাসের বাজারও করেছেন অনেকে। একান্ত কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আজ থেকে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তায় চলাচলকারী মানুষ সংস্পর্শ এড়িয়ে চলছেন। রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা। নগরীর ব্যস্ততম স্পটগুলোয় ছিল না যানবাহন ও মানুষের আনাগোনা। সীমিত আকারে চলেছে গণপরিবহন। সচেতনতার অংশ হিসেবে বেশির ভাগ যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল। কেউ আবার নিয়ম না মেনেই চলাচল করছেন। গণপরিবহন আগের মতোই নোংরা। ছিল না যানজট। রাজধানীর ব্যস্ততম মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে মানুষের তেমন জনসমাগম চোখে পড়েনি। গতকাল যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুরগামী শিকড় পরিবহনের যাত্রী বর্ণা রহমান বলেন, খুবই অল্প সময়ের মধ্যে আমি মিরপুর চলে এসেছি। কোথাও যানজট দেখা যায়নি। বাস আগের মতোই নোংরা ছিল। বাসে তেমন বেশি যাত্রী ছিল না। বাস ভাড়া আগের চেয়ে ১০ টাকা বেশি রেখেছে। তবে বেশির ভাগ যাত্রীর মধ্যে আগের চেয়ে অনেকটা সচেতনতা লক্ষ্য করা গেছে।’ রাইদা পরিবহনের যাত্রী আরজু বলেন, ‘ভাড়া আগের মতোই আছে। তবে রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং যাত্রী কম ছিল।’ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী কয়েকজন জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে নগরবাসীর মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুদের হিড়িক পড়েছে। এক থেকে দুই মাসের বাজার একসঙ্গে কেনার চেষ্টা করছেন অনেকে। বাজারে নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি হওয়ায় এ সুযোগে দাম বাড়াচ্ছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। নিত্যপণ্যের দামে লাগাম টানতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা বাজার মনিটরিং করছে। অতিরিক্ত দাম রাখা ও পণ্যের মূল্যতালিকা না থাকায় ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হচ্ছে। এরপর একই অপরাধ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। এদিকে ব্যবসা-বাণিজ্য, ভ্রমণ, ইভেন্ট, মার্কেট, শপিং মল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ছন্দপতন ঘটেছে। মানুষ এখন আতঙ্কিত। বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ফলে মানুষ একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কারও সঙ্গে কথা বলছে না বা বের হচ্ছে না। জনজীবনে ছন্দপতন ঘটায় রাজধানী যেন এখন স্বস্তিতে!

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর