শুক্রবার, ৩১ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রে মিনিটে মৃত্যু একজনের ভারতে বেপরোয়া গতি

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে মিনিটে মৃত্যু একজনের ভারতে বেপরোয়া গতি

করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা হয়েছে অন্তত ৬ লাখ ৭২ হাজার এবং আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ। এ ভাইরাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মিনিটে একজন করে মারা যাচ্ছেন। আর ভারতে বেপরোয়া গতি পেয়েছে করোনা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের টালি অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মহামারীতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় বিশ্বের শীর্ষস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রে মোট মৃত্যু ১ লাখ ৫৩ হাজার ছাড়িয়েছে। গত বুধবার দেশটিতে ১ হাজার ৪৮৫ জনের মৃত্যু নথিবদ্ধ হয়েছে। ২৭ মে-র ১ হাজার ৪৮৪ জনের মৃত্যুর পর থেকে দৈনিক হিসেবে এটি সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা। এখন যুক্তরাষ্ট্রে কভিড-১৯ এ প্রায় প্রতি মিনিটে একজন করে মারা যাচ্ছেন।  খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা দুই মাসের মধ্যে এখন সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে। গত ১১ দিনে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ১০ হাজার। টানা তিন সপ্তাহ ধরে কভিড-১৯ জনিত মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা সাপ্তাহিক হিসাবে জুনের পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো হ্রাস পেয়েছে। এ মাসে অ্যারিজোনা, ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা ও টেক্সাসে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। সেখানকার হাসপাতালগুলোতে রোগীর স্থান সংকুলান হচ্ছে না। রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এই অঙ্গরাজ্যগুলো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নিয়েও পরে পিছিয়ে আসে। মার্চ ও এপ্রিলে ভাইরাসের দ্রুত বিস্তার ঠেকাতে এই রাজ্যগুলো লকডাউনে ছিল। অঙ্গরাজ্যের হিসাবে কভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটেছে টেক্সাসে, এখানে মারা গেছে প্রায় ৪ হাজার ৩০০ জন। ২ হাজার ৯০০ মৃত্যু নিয়ে এরপরই আছে ফ্লোরিডা। তৃতীয় স্থানে থাকা সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৭০০ জনের।

ভারতে বেপরোয়া গতি : ভারতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই যেন শনাক্তের নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। গতকাল সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে নতুন করে ৫২ হাজার ১২৩ জনের শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ লাখ ৮৩ হাজার ৭৯২। সূত্র : এনডিটিভি।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টায় করোনায় অন্তত ৭৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৪ হাজার ৯৬৮। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৮২ জন ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে। ভারতে বর্তমানে করোনা থেকে সুস্থতার হার ৬৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে মহারাষ্ট্রে। প্রতিদিনই সেখানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। যে পাঁচটি রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে সেগুলো হচ্ছে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়–, কর্নাটক ও উত্তরপ্রদেশ। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, বুধবার শনাক্ত হওয়া নতুন করোনা রোগীদের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৪১ শতাংশই এই পাঁচ প্রদেশের বাসিন্দা।

উইঘুর মুসলিমদের মাঝে করোনা : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম অধ্যুষিত জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে করোনা দেখা দেওয়ায় সেখানে ভ্রমণ বিধিনিষেধ আরোপ করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল থেকে চীনের এই প্রাদেশিক রাজধানীতে প্রবেশ এবং সেখান থেকে অন্যত্র ভ্রমণে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। চীনের মূল ভূখন্ডে নতুন করে করোনা সংক্রমণের যে ঢেউ শুরু হয়েছে তার বেশিরভাগই ওই শহরে শনাক্ত হয়েছে। এই প্রদেশে বর্তমানে ৯৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান।

নিয়মিত এক ব্রিফিংয়ে উরুমকির ভাইস-মেয়র সং ইয়াজুন বলেন, যারা উরুমকির বাসিন্দা নন; যদি তারা শহরটিতে ১৪ কিংবা তারও বেশি দিন অবস্থান করে থাকেন, তাহলে শহর ছেড়ে যেতে চাইলে আগে নিউক্লিক অ্যাসিড এবং অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করাতে হবে। এই পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট মিললে তবেই তারা উরুমকি ছাড়তে পারবেন। তিনি বলেন, প্রয়োজন ছাড়া বাসিন্দাদের উরুমকি ছাড়া উচিত হবে না। সং বলেন, কভিড-১৯ এর উচ্চ-ঝুঁকিপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে যারা উরুমকিতে আসবেন; তাদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন মানতে হবে। অন্য যারা এই শহরে প্রবেশ করবেন, তাদের গত সাত দিনের মধ্যে করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হবে। এ ছাড়া ভ্রমণকারীরা কোন এলাকা থেকে আসছেন তার ওপর নির্ভর করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলি প্রয়োগ করা হবে।

সর্বশেষ খবর