শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
কৃষি

ড্রাগন চাষ বগুড়ায়

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

ড্রাগন চাষ বগুড়ায়

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের মাটিহাঁস গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ কৃষিজীবী। জমিতে ধানের পাশাপাশি কেউ কেউ সবজি চাষ করছেন। ব্যতিক্রম একজন শিক্ষক আজিজুর রহমান। তিনি হেঁটেছেন ভিন্ন পথে। চাষ করছেন ড্রাগন ফলের। এখানেই শেষ নয়, তার ড্রাগন পথ  দেখাচ্ছে অন্যদের। তার দেখাদেখি ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেছেন অনেকে।

জানা যায়, পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটি পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। গাছে গাছে ঝুলছে চার থেকে পাঁচটি করে কাঁচা-আধা পাকা ড্রাগন ফল। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে ড্রাগনের চাষ পদ্ধতি জেনে নিচ্ছেন।

কুমিড়া পন্ডিতপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন, তিন বিঘা জমিতে তিনি ২০১৮ সালে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। নাটোর থেকে প্রথমে ৬০ টাকা করে ১০টি ড্রাগন ফল গাছের চারা এনে রোপণ করেন। পরবর্তীতে আরও ৫০টি চারা রোপণ করেন। রোপণের এক বছরের মাথায় গাছে ফল আসে। ওই একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে ৬০টি থাই পেয়ারা, ৬৫টি আম গাছ ও ১৫০টি লিচু গাছ। প্রায় প্রতিটি গাছে ড্রাগন ফল ধরেছে। ফল বিক্রি করে ৪০-৫০ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। বর্তমানে প্রতি কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। একটি গাছ পরিপক্ব হতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। পরিপক্ব গাছে ২৫ থেকে ৭০টি ড্রাগন ফল ধরে। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি ড্রাগন ফলের চাষ আরও বাড়াচ্ছেন। বাজারে ড্রাগন ফলের চাহিদাও অনেক। ফলটি বেশ রসালো ও সুস্বাদু।

কৃষি বিভাগ জানায়, সব ধরনের মাটিতে ড্রাগন চাষ হয়। তবে উঁচু জমিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তিন মিটার পর পর গর্ত করে চারা রোপণ করতে হয়। বছরের যে কোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। তবে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে হলে ভালো। বাঁশের খুঁটিতে গাছ বেঁধে দিতে হয়। গাছে ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় ২০০-৬০০ গ্রাম। পরিপক্ব একটি গাছে সর্বোচ্চ ৮০টি ফল পাওয়া যায়।

নন্দীগ্রাম উপজেলার সিংজানি গ্রামের নার্সারি ব্যবসায়ী আবদুল হালিম ১৩০টি ড্রাগন গাছের চারা রোপণ করেছেন। এখন কয়েকটি গাছে ফুল এসেছে। ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল ধরে। ড্রাগন চাষে ঝুঁকি কম, ফলের দামও বেশি  দেখে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার আদনান বাবু জানান, বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী। চার প্রকারের ড্রাগনের মধ্যে বাণিজ্যিক চাষের জন্য বাউ-ড্রাগন-১ (সাদা) ও বাউ-ড্রাগন-২ (লাল) উপযোগী। ড্রাগন চাষের সফলতা পাওয়া যাচ্ছে। শিক্ষক আজিজুর রহমানের  দেখাদেখি অনেকে ড্রাগন চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন। বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করার জন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের উৎসাহিত করছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর