বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

মা-মেয়েকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতন

কক্সবাজার প্রতিনিধি

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা

অবশেষে হারবাং ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান মো. মিরানুল ইসলামের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় মামলা হয়েছে।

 গতকাল বিকালে ঘটনার ভুক্তভোগী পারভীন আক্তার চকরিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় আইনি সহায়তা দিচ্ছে ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন।

মামলার আসামিরা হলেন- চকরিয়া উপজেলা হারবাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মিরানুল ইসলাম, হারবাং বৃন্দাবনখিলের জিয়াবুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিন (২৮), মাস্টার মাহমুদুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম (১৯) ও এমরান হোসেনের ছেলে                 জসিম উদ্দিন (৩২)। এতে ২০/২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বাদী পারভীন আক্তার দাবি করেন, ‘২১ আগস্ট একটি সিএনজিতে দুই মেয়ে সেলিনা আক্তার, রোজিনা আক্তার ও ছেলে এমরান এবং তার বন্ধু ছুট্টুসহ চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারার পূর্ব হাইদারনাশির আমার ছোট মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যাচ্ছিলাম। সিএনজিটি হারবাং বৃন্দাবনখিল লালব্রিজ এলাকায় পৌঁছলে দুটি মোটরসাইকেলে মোট ছয়জন লোক পিছু নেয়। একপর্যায়ে মোটরসাইকেল আরোহী ছয়জনসহ বেশ লোকজন সিএনজিটি আটকে ফেলে।’ এজাহারে দাবি করেন, ‘আমাদের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসে। ইতিমধ্যে ধাওয়া করা লোকজন গরু চুরির অপবাদ দিয়ে আমাদের মারধর করে। এ সময় আসামিরা আমাদের কাছে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণের কানের দুল ও গলার চেইন এবং চারটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয় লোকজনসহ আসামিরা আমাদের কোমরে রশি বেঁধে টেনে টেনে হারবাং ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যায়। ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে প্রথমে চেয়ার দিয়ে এবং পরে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। পরে পুলিশ গিয়ে আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এজাহারনামীয় আসামি ও অজ্ঞাত আসামিরা আমাদের হেয় করার জন্য ও মানহানি করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’ ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেওয়া ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশনের সহকারী ডাইরেক্টর মো. শাহপরান বলেন, এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এজন্য ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে রশি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী পারভীন আক্তার থানায় একটি এজাহার দেন। মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও আসামি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলামকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। উল্লেখ্য, শুক্রবার চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নে গরু চুরির অপবাদে মা-মেয়েসহ পাঁচজনকে রশি দিয়ে বেঁেধ নির্যাতন করে স্থানীয় লোকজন। পরে তাদের রশি দিয়ে বেঁধে সড়কে ঘুরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরান পরিষদে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফায় মারধর করেন। পরে গরু চুরির অভিযোগ এনে স্থানীয় বাসিন্দা মাস্টার মাহমুদুল হক শুক্রবার রাতে বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা করেন। পরদিন সকালে আসামিদের আদালতে উপস্থিত করা হলে আদালত তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন। তবে এ ঘটনাটি সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আইনজীবীরা ভুক্তভোগীদের পক্ষে আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে মা ও দুই মেয়ের জামিন মঞ্জুর করে।

সর্বশেষ খবর