বুধবার, ২৬ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

পান্থ পরিযায়ী কাদা বাটান

আলম শাইন

পান্থ পরিযায়ী কাদা বাটান

পান্থ পরিযায়ী (চলার পথের পরিযায়ী) পাখি। বিচরণ করে উপকূলীয় বেলাভূমিতে। সচরাচর দেখা মেলে উপকূলীয় অঞ্চলেই। আমাদের দেশে আসে সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ, বিদায় নেয় মার্চের মধ্যেই। ওড়ার সময় তীক্ষস্বরে চেঁচিয়ে ওঠে, ‘টই...এপ, উইই-উইই-এট’ সুরে। মনের আনন্দে মাঝেমধ্যে শূন্যে ঢেউয়ের মতো আকৃতি নিয়ে উড়ে বেড়ায়। স্বভাবে শান্ত। একাকী কিংবা ছোট দলে বিচরণ করে। অন্য সব প্রজাতির সৈকতচারী পাখিদের সঙ্গেও বিচরণ করতে দেখা যায়। হাঁটুসমান জলে নেমে খাবার খোঁজে। ভাটার সময় নরম পলি বা কাদার ওপর দৌড়ে জলজ পোকামাকড় ধরে। খাবারের সন্ধানে খুব দ্রুত ঠোঁট চালায়। মন ভালো থাকলে বেলাভূমিতে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকে। দৌড়তে দৌড়তে হঠাৎ থেমে যায়। একেবারেই স্বাভাবিকভাবে দাঁড়িয়ে থাকে তখন। দৃশ্যটি উপভোগ করার মতো। উল্লেখ্য, এদের বুকে-পিঠে চায়ের দানার মতো স্পটের কারণে নামকরণ হয় ‘চা পাখি’।

পাখির বাংলা নাম : ‘কাদা বাটান’, ইংরেজি নাম : ‘ডুনলিন’, (Dunlin) বৈজ্ঞানিক নাম : Calidris alpina। এরা ‘বাঁকাঠোঁট চা পাখি’ নামেও পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৭-২১ সেন্টিমিটার। মাথা ও ঘাড় থেকে বুক পর্যন্ত গাঢ় বাদামি রেখা। চোখের ভ্রু সাদাটে। পিঠের পালক ধূসর-বাদামির ওপর কালো ছোপ। বুক ধূসর।

বুকের নিচের দিক সাদা। প্রজনন মৌসুমে কোনো কোনো পাখির পিঠ লালচে-বাদামি এবং পেটের দিকে বড়সড়ো কালো ছোপ দেখা যায় (এ প্রজাতি আমাদের দেশের উপকূলীয় অঞ্চলেও মাঝে মাঝে দেখা যায়)। নিতম্বের মাঝ বরাবর কালো, দুই পাশ সাদা। ঠোঁট কালো, নিচের দিকে সামান্য বাঁকানো। পা খাটো, কালো। স্ত্রী-পুরুষ পাখি দেখতে একই রকম।

প্রধান খাবার : পোকামাকড়, শূককীট ইত্যাদি। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। বাসা বাঁধে তুদ্রাঞ্চলের ঘেসো ভূমিতে। ডিম পাড়ে ৩-৪টি। ডিম ফুটতে সময় লাগে ২০-২২ দিন। শাবক স্বাবলম্বী হয় ১৫-২০ দিনের মধ্যেই। লেখক : কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও বন্যপ্রাণী বিশারদ।

সর্বশেষ খবর