শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

হিফজুরই খুন করেন স্ত্রী ও সন্তানদের!

সিলেটের ট্রিপল মার্ডার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট

সিলেটের গোয়াইনঘাটে মা ও ছেলে-মেয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নিহত আলেমা বেগমের বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। বুধবার রাতে গোয়াইনঘাট থানায় মামলাটি দায়ের হয়। মামলায় আসামি হিসেবে কারও নাম উল্লেখ করা না হলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে হত্যা তিনটি আলেমার স্বামী হিফজুর রহমানই ঘটিয়েছেন। পারিবারিক কলহের জেরে হিফজুর নিজেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে খুন করেন। এ-সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য-প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, হিফজুর রহমানের শ্যালিকার বিয়ে আজ শুক্রবার। এ বিয়েতে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে কয়েক দিন ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। এর আগেও পারিবারিক বিরোধ নিয়ে কয়েকবার সালিশ হয়। এ বিরোধের জেরেই হিফজুর স্ত্রী ও সন্তানদের কুপিয়ে খুন করেছেন বলে পুলিশের ধারণা। স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার দিন বুধবার ভোরে ফয়েজ নামে এক আত্মীয়কে ফোন করে টাকা নিয়ে আসতে বলেন হিফজুর। ওই সময় তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ, হাসপাতালে নিতে হবে।

টাকা-পয়সা নিয়ে দ্রুত চলে আসেন।’ ফয়েজ বাড়িতে এসে ডাকাডাকি করলে ভিতর থেকে সাড়া মেলেনি। পরে প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে দরজা খুললে ভিতরে রক্তাক্ত অবস্থায় হিফজুর ও তার পরিবারের সদস্যদের পড়ে থাকতে দেখেন। উপস্থিত লোকজন প্রথমে হিফজুরকেও মৃত ভাবেন। হঠাৎ চোখ মেললে তার বেঁচে থাকার বিষয়টি টের পান তারা। এরপর তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ জানায়, হিফজুরের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাত থাকলেও তা গুরুতর নয়।

তবে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তার জ্ঞান ছিল না। বর্তমানে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে আলেমা বেগম ও তার দুই সন্তানের লাশ স্বজনদের হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বাদ আসর আলেমার বাবার বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার রামনগরে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। গোয়াইনঘাট থানার ওসি আবদুল আহাদ জানান, হত্যার বিভিন্ন আলামত, পূর্বাপর বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণে মনে হচ্ছে হিফজুর রহমান নিজেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।

পারিবারিক অশান্তি থেকে তিনি এ নৃশংস কাজটি করেছেন। তাকে পুলিশ প্রহরায় রাখা হয়েছে। কিছুটা সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বুধবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার বিন্নাকান্দি গ্রামে হিফজুর রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগম ও তার শিশু সন্তান মিজান আহমদ ও তানিশার জবাই করা ও কোপানো লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত ছিলেন হিফজুর রহমান।

সর্বশেষ খবর