সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে পেনশন সুবিধা না পাওয়া সংক্রান্ত বিধানের অংশবিশেষ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল মঞ্জুর করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ চলমান থাকছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী আইনজীবী মাহবুব মোরশেদ নিজেই শুনানি করেন।
২০১১ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ মাহবুব মোরশেদ স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন। একই বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে তার পদত্যাগপত্র কার্যকর হয়। পরবর্তী সময়ে এককালীন পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুরের জন্য তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মাহবুব মোরশেদের পেনশন সংক্রান্ত বিষয়টি ফেরত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, তিনি ২৫ বছর পূর্তি সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট বিধানের আলোকে পেনশনের জন্য কোনো আবেদন করেননি বলে পেনশনপ্রাপ্ত নন (১৯৭৪ সালের গণকর্মচারী অবসর আইনের ৯ ধারা)। এ অবস্থায় বিধি-৩০০ এবং ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জে ২০১৬ সালে করে মাহবুব মোরশেদ রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৮ মে হাই কোর্ট রুল জারি করেন। রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০২১ সালের বছরের ১৮ মার্চ রায় দেন হাই কোর্ট। রায়ে ২০১৫ সালের ২৫ মার্চের ওই চিঠি আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে চাকরির মেয়াদ অনুসারে মাহবুব মোরশেদের পেনশনসহ অন্যান্য বকেয়া সুবিধা গণনা ও মঞ্জুর করতে সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নির্দেশ দেওয়া হয়। হাই কোর্ট চাকরি থেকে পদত্যাগের কারণে পেনশন না পাওয়া সংক্রান্ত বাংলাদেশ সার্ভিস রুলসের (বিএসআর) প্রথম খণ্ডের বিধি-৩০০(এ) অংশটুকু সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করেন। হাই কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তখন চেম্বার আদালত হাই কোর্টের রায় স্থগিত করেন। আর আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠানো হয়।