রবিবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাজাকার বলায় দুই আওয়ামী লীগ কর্মী আটক

মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগের দুই নেতাকে রাজাকার পরিবারের সন্তান বলায় দলের দুই কর্মীকে আটক করে কোর্টে চালান দিয়েছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ। তবে সবকিছু শুনে কামাল ও ইয়াছিন নামে দুজনকেই জামিনে মুক্তি দিয়েছেন আদালত।

জানা গেছে, আটকরা কিছুদিন আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘রাজাকার পরিবার থেকে আওয়ামী লীগে এসে নেতা হয়েছেন। এ কমিটি আওয়ামী লীগের কেউ মানবে না।’ এ অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই দুজনকে আটক করে। গত নভেম্বরে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকেই উত্তপ্ত রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর অনেককেই প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কমিটি নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, যে দুজনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, তারা রাজাকার পরিবারের সন্তান। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. জহুরুল হক মুন্সী বীরপ্রতীক, হেলাল উদ্দিন খান, সাইদুর রহমান, সামছুল হকসহ ১৪ জন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের জামালপুর জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিতভাবে প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন। প্রতিবাদের অনুলিপি পাঠিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, সাধারণ সম্পাদক ও ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক বরাবর। তারা বলেন, ২৮ নভেম্বর কোনো সম্মেলন ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শাহিনা বেগম ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদারের নাম ঘোষণা করা হয়। অথচ তারা দুজনই যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। শাহিনা বেগমের বাবা মরহুম আবদুল কাইয়ুম মুন্সী ১৯৭১ সালে লুটপাট, হত্যা, অগ্নিসংযোগের কারণে যুদ্ধাপরাধ মামলায় তালিকাভুক্ত আসামি ছিলেন। মৃত্যুর কারণে মামলা খারিজ হয়ে যায়। অন্যদিকে ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদারের বাবা মরহুম মফিজল হক তালুকদার ১৯৭১ সালে দড়িপাড়া, মাঝপাড়া, উত্তর বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় লুটপাট, হত্যা, অগ্নিসংযোগ করেন। এ ছাড়া তৎকালীন বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হামিদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও তার বাড়ির প্রহরী কুব্বাত মিয়াকে অগ্নিকান্ডে নিক্ষেপ করেন। এ দুজনকে বকশীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী প্রদান করেছেন বলে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা বিশ্বাস করি না। এদিকে দুই নেতাকে রাজাকারের সন্তান বলায় আটক আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোকাম্মেল বলেন, আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির দুই নেতাকে হেনস্তার অভিযোগে কিছুদিন আগে কামালকে আটক করা হয়েছিল। সব শুনে কোর্ট তাকে জামিন দেন। ইয়াছিনের নাম এফআইআরে না থাকলেও সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গতকাল তাকে আটক করে কোর্টে পাঠায় পুলিশ। কোর্ট জামিন মঞ্জুর করেন।

সর্বশেষ খবর