শুক্রবার, ৩১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
ইতালি নেওয়ার নামে মুক্তিপণ

ক্ষতিপূরণের দাবিতে দালালের বাড়ি ঘেরাও

কালকিনি (মাদারীপুর) প্রতিনিধি

লিবিয়া থেকে ইতালি নেওয়ার কথা বলে তিন প্রবাসীকে জিম্মি করে তাদের পরিবার থেকে মুক্তিপণ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর রাজদি গ্রামের শাজাহান ফকিরের ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী সাইদুল ফকিরের বিরুদ্ধে। আর প্রতারণার শিকার প্রবাসীদের পরিবারের লোকজন গতকাল সকালে ক্ষতিপূরণের দাবিতে দালাল সাইদুল ফকিরের গ্রামের বাড়ি ঘেরাও করেছেন। তবে সাইদুল ফকিরের এক আত্মীয় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলে ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। সাইদুল ফকিরের মা হাসিনা বেগমের দাবি, ভুক্তভোগী ওই তিন প্রবাসীর সঙ্গে তার ছেলে সাইদুলও দালাল ধরে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় সবাই বিদেশি একটি চক্রের খপ্পরে পড়েন এবং সবাই ওই চক্রকে মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হন। গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গত বছরের সেপ্টেম্বরে কালকিনি পৌর এলাকার উত্তর রাজদি গ্রামের শাজাহান ফকিরের ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী সাইদুল ফকিরের সঙ্গে লিবিয়ায় পরিচয় হয় কালকিনি পৌর এলাকার কাশিমপুর গ্রামের আজাহার ঘরামির ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী রবিন ঘরামি (২২), কালকিনি উপজেলার চরলক্ষ্মীপুর গ্রামের ইকবাল সরদারের ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী আসলাম সরদার (২৩) ও ফরিদপুরের সিকদারকান্দা গ্রামের রহম মৃধার ছেলে লিবিয়াপ্রবাসী সোহাগ মৃধার (২৫)। তখন সাইদুল ফকির তাদের সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া থেকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রলোভন দেখান। আর সেমতে ওই তিন প্রবাসীর পরিবার বাংলাদেশে থাকা সাইদুলের মা হাসিনা বেগম, ভাই সাইফুল ফকির ও স্ত্রী ইয়াছমিন বেগমের কাছে টাকা পরিশোধ করে। কিন্তু লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় পথিমধ্যে একটি চক্রের হাতে জিম্মি হন তারা। আর মুক্তিপণ হিসেবে প্রত্যেকের জন্য দিতে হয় আরও ১১ লাখ টাকা করে। গ্রামবাসী সোবহান সরদার, আলামিন সরদার, খলিল সরদার, রাশেদ ঘরামি, জসিম বয়াতি, আবদুল হালিম, দেলোয়ার চৌকিদার, নুর মোহাম্মদ, শাহাদাত সরদার, ইলিয়াছ ঘরামি, আবুল চৌকিদারসহ ২০-২৫ জন জানান, মুক্তিপণের টাকা দিতে জিম্মি হওয়া পরিবারগুলোকে ভিটেমাটি পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছে। এখন তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে। আর এজন্য নিরুপায় হয়ে ক্ষতিপূরণের দাবিতে তারা দালাল সাইদুল ফকিরের বাড়ি ঘেরাও করেছে। এ ব্যাপারে সাইদুল ফকিরের মা হাসিনা বেগম স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘রবিন ঘরামি, আসলাম সরদার ও সোহাগ মৃধার সঙ্গে আমার ছেলে সাইদুলও দালাল ধরে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় বিদেশি একটি চক্রের হাতে জিম্মি হয় এবং সবাই ওই চক্রকে মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হয়। তাদের মতো আমাদেরও ১১ লাখ টাকার বেশি দিতে হয়েছে সাইদুলকে মুক্ত করতে।’

 

সর্বশেষ খবর