বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশের ইতিহাসে বৃহৎ জাহাজের নোঙর মাতারবাড়ীতে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

দেশের ইতিহাসে বৃহৎ জাহাজের নোঙর মাতারবাড়ীতে

চট্টগ্রামের মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে নির্মাণাধীন গভীর সমুদ্র বন্দরে ভিড়ল দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জাহাজ। গতকাল বিকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৩ হাজার টন কয়লা নিয়ে ‘অউসো মারো’ নামে পানামার পতাকাবাহী জাহাজটি ভিড়েছে মাতারবাড়ী জেটিতে।

দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে দেশের অন্যতম বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। চলতি জুনে দেশের অন্যতম এ বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উৎপাদনে যাওয়ার কথা রয়েছে। ‘অউসো মারো’ নামে জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২২৯ মিটার এবং ড্রাফট ১২ দশমিক ৫ মিটার। চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ নোঙরের সুযোগ পাচ্ছে। পটুয়াখালীর পায়রাবন্দরে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ভিড়েছে ১০ দশমিক ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ। কিন্তু ‘অউসো মারো’র মতো জাহাজ দেশের কোনো বন্দরে এর আগে নোঙর করেনি। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘পানামার পতাকাবাহী এমভি ‘অউসো মারো’ মাতারবাড়ীতে নোঙর করায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। এটি একটি মাইলফলক। এর আগে দেশে এত বড় ও গভীরতার জাহাজ ভিড়েনি।’

জানা যায়, পানামার পতাকাবাহী ‘অউসো মারো’ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বহির্নোঙরে আসে। গতকাল বিকালে জাহাজটি মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে আনা হয়। জাহাজটি বহির্নোঙর থেকে আনার সময় পাইলটেজ টিমে ছিলেন বন্দরের সদস্য (হারবার অ্যান্ড মেরিন) কমডোর ফজলুর রহমান, ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপটেন ফরিদুল আলম, ক্যাপটেন জহির, মেইন পাইলট ক্যাপ্টেন কামরুল এবং কো পাইলট ক্যাপ্টেন শামস। জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য পরিবহনের জন্য তৃতীয় কোনো দেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে হয় ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকরা সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কার কলম্বো কিংবা মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দর ব্যবহার করছে ট্রানজিট বন্দর হিসেবে। তৃতীয় দেশ হয়ে আমদানি-রপ্তানি করায় পরিবহন ব্যয় যেমন বাড়ছে, তেমনি আমদানি-রপ্তানির সময় বেড়ে যায় ১০ থেকে ১৪ দিন। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর পুরোদমে চালু হলে ট্রানজিট ভোগান্তি ছাড়াই বিভিন্ন বন্দরে সরাসরি পণ্য পরিবহন করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। সরাসরি পণ্য রপ্তানির কারণে প্রতি বছর ৬ বিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। বিভিন্ন দেশ এ বন্দর ব্যবহার করার কারণে আয় হবে আরও বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার।

সর্বশেষ খবর