শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

নারীর ঢল বউমেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

নারীর ঢল বউমেলায়

বগুড়ার শেরপুরে প্রতি বছর বারুণী মেলা শেষে ‘বউমেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল গাড়ীদহ নামক স্থানে করতোয়া নদীর পশ্চিম কোল ঘেঁষে বসে পুরুষ বর্জিত এ মেলা। ফলে মেলায় ছিল নারীদের ঢল। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই ছিল নারী। বিভিন্ন বয়সী নারীরা মাতিয়ে রাখেন মেলা। তারাই কেনেন সব ধরনের পণ্যসামগ্রী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে এ মেলা। কয়েক যুগ ধরেই এভাবে চলে আসছে ঐতিহ্যের এ বউ মেলা। মেলায় অংশ নেওয়া নারীরা জানান, প্রতি বছরই বিশাল মাঠজুড়ে এ মেলা বসে। এবার মেলায় ছিল বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট। এক পাশে লেছে হুন্ডা ও নাগরদোলা খেলা।

নারীরা অনেকে দল বেঁধে, আবার অনেকে ইচ্ছামতো দোকানে দোকানে ঘুরছেন। ভিড় করে জিনিসপত্র পছন্দ করেছেন। তারা দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনেছেন। অনেকেই ছোট ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নানা ধরনের ভাজিপুরির দোকানে ভিড় জমিয়েছেন। এলাকার নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা ঘোষ জানান, তিনি মেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, হাত পাখা, কাঠের সামগ্রী, মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনেছেন। ছেলে-মেয়েকে হুন্ডা খেলা দেখিয়েছেন। নাগরদোলায় চড়ে ওরা দারুণ আনন্দ পেয়েছে। মেলায় আসা সালমা আকতার বলেন, ‘বাড়ির কাছে মেলা হওয়ায় সকালে একদফা গিয়েছিলাম। বিকালেও আরেকদফা গেছি। অনেক কিছু খেয়েছি। কিছু সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। সন্তানদের জন্যও নানা ধরনের খেলনা কিনেছি। বাদ যায়নি মিষ্টি কেনাও।’ বউ মেলাটি ভীষণ আনন্দ দিয়েছে বলেও জানান তিনি। মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান জানান, প্রত্যেক বছর চৈত্রের বারুণী তিথির দ্বিতীয় দিনে এখানে বউ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে এবার তিথি অনুযায়ী মেলা হয়নি। রোজার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। তাই রোজার ঈদের পর পরই বৈশাখে মাসে এসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বউ মেলায় বিভিন্ন বয়সী নারীরা নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনেছেন। এবার মেলা জাকজমকভাবে হওয়ায় সময়সীমা আরও দু-এক দিন বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনাও রয়েছে। এলাকার প্র্রবীণ ব্যক্তি আজমল হোসেন জানান, কবে থেকে এখানে স্নানোৎসব ও মেলা হয়ে আসছে তা সঠিক করে বলা মুশকিল। তবে অনুষ্ঠানটি যে শতবর্ষী তা ধারণা করা হয়। আর এখানে কয়েক যুগ ধরে বউ মেলা হয়ে আসছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর