নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নির্বাচন কমিশনের জারি করা নীতিমালা বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক। গতকাল সুজন সভাপতি এম. হাফিজউদ্দিন খান ও সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে সাংবাদিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানান তারা। এদিকে সাংবাদিক নীতিমালা সংশোধনে সিইসিসহ কমিশনারদেরকে স্মারকলিপি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)। সুজনের বিবৃতিতে বলা হয়- সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে সহযোগিতার লক্ষ্যে কমিশন উল্লিখিত নীতিমালা জারি করেছে বলে উল্লেখ করা হলেও নীতিমালার নির্দেশনাগুলো কার্যত সাংবাদিকদের শেকলবন্দি করে ফেলবে। বিবৃতিতে সুজন জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন গত ১২ এপ্রিল নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে দায়িত্বপ্রাপ্ত গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য একটি নীতিমালা জারি করেছে। বিভিন্ন সাংবাদিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে নীতিমালাটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে নির্বাচন কমিশন আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও নীতিমালাটি সংশোধন বা বাতিলের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। আমরা মনে করি, জারিকৃত নীতিমালাটি সাংবাদিকদের নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। উপরন্তু সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনোরূপ আলাপ-আলোচনা না করেই এই নীতিমালা জারি করা হয়েছে, যা সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের কার্যকর অংশগ্রহণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে খর্ব করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়- মোটরসাইকেল সাংবাদিকদের অতি প্রয়োজনীয় বাহন। মোটরসাইকেল ব্যবহার করে সাংবাদিকরা খবর সংগ্রহের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে দ্রুত যাতায়াত করতে পারেন। এ ছাড়া অনেক ভোট কেন্দ্র রয়েছে যেগুলোর অবস্থান দুর্গম এলাকায়। সেসব ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মোটরসাইকেলই একমাত্র বাহন, অন্য কোনো যানবাহনে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, জারিকৃত নীতিমালায় সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধানে আমরা হতবাক হয়েছি। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক সাংবাদিক দুর্গম এলাকার ভোট কেন্দ্রে খবর সংগ্রহে যেতে পারবেন না- যার ফলে ওইসব এলাকার নির্বাচনের পরিস্থিতিও জনগণ জানতে পারবে না। সাংবাদিকরা ভোটের দিনের বিভিন্ন ঘটনাবলি জনগণের সামনে তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করতে পারবেন না, ভোটকক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবেন না- এ ধরনের বিধান জনগণের কাছে সঠিক নির্বাচনী তথ্য তুলে ধরার পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের বাধার সৃষ্টি করবে।