শিরোনাম
সোমবার, ১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরগরম সিটি নির্বাচনের মাঠ

বিতর্ক এড়ালেন খালেক, কঠোর বার্তা বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পুনরায় প্রার্থী হওয়ায় আগামী ১১ মে বর্তমান সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক দায়িত্বভার হস্তান্তর করছেন। এর আগে মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের নিয়ে কেসিসির ১৯তম সাধারণ সভা গতকাল অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় আলোচ্যসূচিতে ‘নগরীর শিববাড়ি মোড়ের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু চত্বর নামকরণ প্রসঙ্গে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রাখা হয়।’ কেসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলামের স্বাক্ষর করা সভার নোটিস প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরদের দেওয়া হয়। কিন্তু নাম পরিবর্তনটি স্পর্শকাতর হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলতে থাকে। অবশেষে বিতর্ক এড়াতে আলোচ্যসূচি থেকে নাম পরিবর্তনের বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়। মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন নাম পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে কোনো আলোচনাও হবে না। এদিকে সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে সিটি মেয়রকে তাৎক্ষণিক অভিনন্দন জানান অনেকে। সভায় সিটি মেয়র খুলনার উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।

অন্যদিকে সিটি নির্বাচনে দলের কেউ অংশগ্রহণ করলে বা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সতর্কবার্তা দিয়েছে মহানগর বিএনপি। বিএনপি নেতারা বলছেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে দল নির্বাচনে যাবে না। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক ধ্বংস করায় খেসারত দিতে হবে সরকারকে। জানা যায়, গতকাল কেসিসির ১৯তম সাধারণ সভায় মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, খুলনার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত আন্তরিক। তিনি খুলনাকে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে বিপুল অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। বরাদ্দকৃত অর্থে আমরা খুলনাকে পরিচ্ছন্ন, সুন্দর ও তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করতে চাই। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী আমাকে পুনরায় নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। আগামী নির্বাচনে নির্বাচিত হয়ে আসতে পারলে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে অসম্পূর্ণ সব কাজ সম্পন্ন করবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সিটি মেয়র আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কার্যক্রম সফল করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, কেসিসির মেয়র প্যানেলের সদস্য মো. আমিনুল ইসলাম মুন্না, মো. আলী আকবর ও অ্যাডভোকেট মেমরী সুফিয়া রহমান শুনুসহ কাউন্সিলর, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও সরকারি দফতরের প্রতিধিনিরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তালুকদার আবদুল খালেককে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দেওয়ায় তাঁকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান বঙ্গবন্ধু পরিষদ-খুলনা ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)-খুলনা নেতারা। নগর ভবনের জিআইজেড মিলনায়তনে মতবিনিময়কালে সিটি মেয়র আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদ-খুলনা জেলা শাখার সভাপতি ও বিএমএ-খুলনার সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী নেওয়াজ, সহসভাপতি ডা. এটিএম মঞ্জুর মোর্শেদ, জামাল উদ্দিন, মুন্সী  হেকমত আলী, ডা. সুতনু কুমার সুকর্ণ, ডা. মাহবুবুল ইসলাম, স্বাচিপ-খুলনার সভাপতি ডা. এস এম সামছুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ খুলনা সিটি নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে থাকলেও বিএনপি নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছে। মহানগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় বলা হয়, সিটি নির্বাচনে দলের কেউ অংশগ্রহণ করলে বা কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচনী ডামাডোলের মধ্যে খুলনায় একই সঙ্গে ৮. ৯. ১০ ও ১১ মে খুলনা সদর, সোনাডাঙ্গা থানা, দৌলতপুর থানা ও খানজাহান আলী থানা বিএনপির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেছে দলটি।  বিএনপি নেতা সৈয়দা রেহেনা ঈসাকে আহ্বায়ক, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা ও অ্যাডভোকেট মাসুম রশিদকে সদস্য করে তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গতকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ে থানার সম্মেলন সম্পন্ন করতে কর্মকান্ড শুরু করেছে। মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, সিটি নির্বাচনে সরকারের পাতা ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি। সরকারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ধরে রাখার দুরভিসন্ধি জাতীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার জন্ম দিচ্ছে। ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক ধ্বংস করায় খেসারত দিতে হবে সরকারকে। তিনি বলেন, সিটি নির্বাচন সামনে রেখে খুলনায় মামলা ছাড়া নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির নামে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর