মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

গ্রীষ্মে আসা বনসুন্দরী

নজরুল মৃধা, রংপুর

গ্রীষ্মে আসা বনসুন্দরী

শীতকালেই অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে বলে সবাই জানি। কিন্তু আসল সত্য তা নয়। গ্রীষ্মকালেও অতিথি হয়ে কিছু কিছু পাখি আমাদের দেশে আসে। এ রকম একটি পরিযায়ী পাখির নাম বনসুন্দরী। এ পাখির আবাসস্থল দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে হলেও পাখিটি আমাদের অতিথি। এ পাখির অবস্থানে বনের সৌন্দর্য অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় বলে একে বনসুন্দরী বলে ঢাকা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় এই পাখিটি বাংলাদেশে এখন খুব কম দেখা যায়। তবে সম্প্রতি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শালবন থেকে এক বনসুন্দরীকে ক্যামেরাবন্দি করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহন ওয়াদুদ। পাখিটি দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ফলে পাখিটিকে বনের সৌন্দর্য বলা হয়ে থাকে। পাখিটির দেহে নয়টি রং রয়েছে, তাই অনেকে এ পাখিকে নওরঙ্গা পাখিও বলে থাকেন। গ্রীষ্মকালে অন্য দেশ থেকে এই পাখিটি আমাদের দেশে আসে প্রজননের জন্য। জানা গেছে, এ পাখি এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত আমাদের দেশে থাকে। বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর বাচ্চাকে নিয়ে চলে যায় নিজ দেশে। এ পাখির প্রিয় খাদ্য পাতার নিচে থাকা পোকা-মাকড়।

লম্বায় বনসুন্দরী হয় ২০ থেকে ২১ সেন্টিমিটার। লেজ একেবারেই খাটো। প্রথম দেখাতে মনে হয় ওদের লেজ নেই। তবে খুব ভালো করে তাকালে লেজটা ধরা পড়ে। ওদের পালকে রয়েছে লাল, সাদা, কালো, হলুদ, নীল, সবুজ ও বাদামি রঙের সংমিশ্রণ। মাথার ওপর থাকে হলদে পট্টির মতো। গলার নিচটা হয় সাদা। চোখের দুই পাশটা মোটা দাগের কাজল কালির টান দেওয়া, দাগটি একেবারে ঘাড়ে এসে ঠেকেছে। চোখের ওপর রয়েছে সরু সাদা টানা দাগ। পিঠ ও কাঁধ সবুজ। ঠোঁট কালো। ডানার শুরুটা নীল, নিচের অংশ বাদামি। বুকের তলার নিচটা লালচে-বাদামি। লেজের পালক টুকটুকে লাল। পা ফিকে বেগুনি। পাখিটির দিকে তাকালে মনে হয় প্রকৃতির সব সৌন্দর্য ঢেলে দেওয়া আছে পাখিটির দেহে। এদের পায়ে খুব শক্তি। মাটিতে যখন লাফিয়ে লাফিয়ে চলে তখন এর সৌন্দর্য চোখে পড়ে। তবে এরা একা থাকতে পছন্দ করে। প্রজননের জন্য যখন জোড়া বাঁধে তখন বাসা এবং বংশবৃদ্ধির কাজে ব্যস্ত থাকে। বাচ্চা একটু বড় হলে উড়াল দিয়ে চলে যায়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর