সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভয়াবহ ডেঙ্গু, এক দিনে তিন মৃত্যু, ঝুঁকিতে শিশুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভয়াবহ ডেঙ্গু, এক দিনে তিন মৃত্যু, ঝুঁকিতে শিশুরা

রাজধানীর ধানমন্ডির শংকরের একটি ভাড়া বাসায় মা-বাবার সঙ্গে থাকত পাঁচ বছরের শিশু সৈকত। বিকাল হলেই সাইকেল নিয়ে বাসার সামনের রাস্তায় সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে খেলায় মেতে উঠত। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে সৈকত। গতকাল একদিনে ডেঙ্গু কেড়ে নিয়েছে তিনজনের প্রাণ। ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই মারা গেছেন ১৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৭৬ জন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৮৭ জন। গতকাল আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন ৯৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ৮৭ জন এবং ১০ জন ভর্তি হয়েছেন ঢাকার বাইরের হাসপাতালে। জানুয়ারি মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৬৬ জন, মারা গেছেন ছয়জন। ফেব্রুয়ারি মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৬ জন, মারা গেছেন তিনজন। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১১ জন। এপ্রিলে ১৪৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন দুজন। মে মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন, মারা গেছেন দুজন, জুন মাসে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫৪ জন, মারা গেছেন তিনজন।

দেশে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি, র?্যাশ হওয়া, মাথাব্যথা হওয়া। কিন্তু ২০২১ সালের পর ডেঙ্গুর উপসর্গ পরিবর্তন হতে শুরু করে। তখন ডেঙ্গুতে নতুন উপসর্গ পেটে ব্যথা ও পাতলা পায়খানাসহ অন্যান্য পরিবর্তন হয়। এটি এখনো চলমান রয়েছে। আগে এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়াত কিন্তু এখন রাতেও কামড়ায়। অসুখের ধরন এবং মশার গতিবিধিতেও পরিবর্তন এসেছে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জ্বর হলেই দ্রুত এনএস-১ পরীক্ষা এবং বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ বি এম আবদুুল্লাহ বলেন, ‘জ্বর হলে ডেঙ্গু কি না তা শনাক্ত করতে টেস্ট করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে অধিকাংশ রোগী বাড়িতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে যায়। কিন্তু যাদের অন্যান্য জটিলতা থাকে তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ডেঙ্গু হলে তরল জাতীয় খাবার অর্থাৎ ফ্লুইড ব্যবস্থাপনায় নজর রাখতে হবে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ কিংবা অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময় শিশু এবং বয়স্কদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার, শিশুদের ফুলহাতা জামা পরানো, বাড়ির আশপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে।’

সর্বশেষ খবর