মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

রাস্তাঘাট তলিয়ে ভয়াবহ বন্যা

প্রতিদিন ডেস্ক

রাস্তাঘাট তলিয়ে ভয়াবহ বন্যা

ছবি : সিলেট

সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি বাড়ার খবর পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। এ ছাড়া কিছু অঞ্চলে নদনদীর পানি কমলেও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন মানুষ। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সিলেট : সিলেটে ফুঁসছে নদী। অব্যাহত রয়েছে পানি বৃদ্ধি। সুরমা, কুশিয়ারা, ধলাই  ও লোভাসহ সবকটি নদীর পানি গেল ২৪ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে। টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বৃষ্টি ও ঢল অব্যাহত থাকলে সিলেটজুড়ে বন্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। অতিবৃষ্টির কারণে নিম্নাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার তোয়াকুল, নন্দীরগাঁও, রুস্তমপুর, পশ্চিম জাফলং, সদর, পূর্ব জাফলং ও মধ্য জাফলং ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে সাত ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জরুরি কাজে উপজেলা সদরে যেতে হলে ওইসব এলাকার লোকজনকে এখন  যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নৌকা ব্যবহার করতে হচ্ছে। উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ শাখার কর্মকর্তা (পিআইও) শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ জানান, উপজেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। বন্যা দেখা দিলে পানিবন্দি  লোকজনকে উদ্ধার ও আশ্রয়ের জন্য ৫৬টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আর এই কাজের জন্য উদ্ধারকারী টিমও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে গোয়াইনঘাট ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম ইসলামপুর, উত্তর ও দক্ষিণ রণিখাই, তেলিখাল এবং ইছাকলস ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানি উঠতে শুরু করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন মানুষ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বন্যা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে কয়েক দিন ধরে চলা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলেও এখনো বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। জেলার প্রধান প্রধান নদী সুরমা, যাদুকাটা, রক্তি, বৌলাই, চেলাসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে  বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল থেকে সুরমা নদীর ওই পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এদিকে ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা নদীর পানি। জেলার হাওরগুলোতে পানি বাড়লেও লোকালয়ে প্রবেশ করেনি। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

মৌলভীবাজার : গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তবে বৃদ্ধি পাওয়া পানি কোথাও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কমলগঞ্জে কয়েকটি ইউনিয়নে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ১০টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। উজানে ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধলাই নদীর পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে বন্যার আশঙ্কা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী। কমলগঞ্জের ধলাই নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলের পানিতে অস্বাভাবিকভাবে পানি বেড়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে এখন পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। পানি উন্নয়ন বোর্ড মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাকিব হোসেন ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,  ভানুগাছ রেলসেতু এলাকায় পরিমাপ করে দেখা গেছে ধলাই নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা এলাকা দিয়ে ইসলামপুর, মাধবপুর, আদমপুর, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ পৌরসভা, মুন্সিবাজার ও রহিমপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে দীর্ঘ ৫৭ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে মনু নদীতে মিলিত হয়েছে ধলাই নদী। এর মাঝে অসংখ্য স্থানে আঁকাবাঁকা হয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এসব ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ আছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সার্বক্ষণিক নজদারি আছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় ভারী বৃষ্টি হলে ধলাই নদীর পানি আরও বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করলে বন্যার আশঙ্কা থাকবে।

হবিগঞ্জ : বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় কমতে শুরু করেছে হবিগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীর পানি। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪.০০ মিলিমিটার। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৪১ মিলিমিটার। তিনি জানান, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে হবিগঞ্জে নদ-নদীর পানি বাড়ছিল। যদিও খোয়াই, কালনী, কুশিয়ারা ও ধলেশ্বরীসহ কোনো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিপাত বাড়লে নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে পারে। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খোয়াই নদীর বাল্লা পয়েন্টে বিপৎসীমার ২১.২০, শায়েস্তাগঞ্জ পয়েন্টে ১৩.২০, মাছুলিয়া পয়েন্টে ৯.০৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ৮.৫৫, মার্কুলি পয়েন্টে ৮.০৪ ও আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে ৫.৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

রংপুর : উজানে ভারী বর্ষণ ও নেমে আসা ঢলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার ফলে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তিস্তা নদী এলাকায় হলুদ সতর্ক ও সংকেত জারি করা হয়েছে। রংপুর, নীলফামারী, লালমনিররহাট, কুড়িগ্রামে কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি। 

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, তিস্তার উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গত পাঁচ দিনে তিস্তা নদীর পানি সমতল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছিল। গতকাল সকাল ৬টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ডালিয়া পয়েন্টের পানি ৫২ দশমিক ২০ মিটারে প্রবাহিত হয়েছে। এ পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫০ সেন্টিমিটার। তবে ৯টায় কিছুটা কমে ডালিয়া পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হয়েছে। এ ছাড়া বিকাল ৩টায় ধরলা নদী কুড়িগ্রাম পয়েন্টে ১ দশমিক ২৪ মিটার, তালুক শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ১ দশমিক ৩১ মিটার, দুধকুমার নদের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৫০ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে ২ দশমিক ৯০ মিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা উপজেলার মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। লক্ষীটারী ইউনিয়নে প্রায় ২০০০ পরিবার, গজঘণ্টা ইউনিয়নে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়েছেন বলে স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানান। এদিকে কাউনিয়া উপজেলায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।  গঙ্গাচড়ার লক্ষীটারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদী বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় তার ইউনিয়নে জয়রাম ওঝা, কেল্লারপাড়, শংকরদহ, বাগেরহাট, চরইচলি এলাকার প্রায় আড়াই হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সবাই সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

গজঘণ্টা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, রবিবার সকালে বয়ে যাওয়া ঝড়ে তার ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানে ও দেশের অভ্যন্তরে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীগুলো পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমার নদের অববাহিকা ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। যার ফলে এসব নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এদিকে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়ন ছাতুনামা ও ভেন্ডাবাড়ী, খালিশা চাপানী ইউনিয়ন ছোটখাতা, বাইশপুকুর, উত্তরাবাজার, খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন কিশামত চর প্লাবিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে তিস্তাপাড়ের মানুষ। চর এলাকায় চাষাবাদের জন্য বসবাসরত লোকজন উঁচু এলাকায় চলে আসছেন।

লালমনিরহাট : বর্ষণ ও উজানের ভারী ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চল ও তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অন্তত ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, পানিবন্দি হয়ে পড়ছে বেশ কিছু এলাকা।

গতকাল সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পরে সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেমি. নিচে রেকর্ড করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘেরচর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারী ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তীরবর্তী এলাকায় রাস্তা ডুবে যাওয়ায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। বিপাকে পড়েছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়াও গরু-ছাগল ও পোষা প্রাণী নিয়েও ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দি লোকজন। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় শুকনো খাবার ও স্যানিটেশন সমস্যায় পড়বে হাজারো মানুষ।

কুড়িগ্রাম : টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ফলে নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চলসহ ছোট ছোট চর ও ডুবোচরসমূহ নিমজ্জিত হচ্ছে। এখনো পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও এসব এলাকার মানুষজন বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন।

এরই মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে নদ-নদী অববাহিকার ওইসব চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোতে। তবে এখনো ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও পানি উঠেছে এসব এলাকার পটল, ঢেঁড়শ, ঝিঙে ও করলাসহ বিভিন্ন সবজি খেতে।

নীলফামারী : উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই করছে তিস্তা নদীর পানি। গতকাল সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার (৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে পানি আরও বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বেশ কয়েকটি চরের বাসিন্দারা। বন্যার আশঙ্কায় তিস্তাপাড়ের ফসল আগাম ঘরে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা।

ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, সকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পায়। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যেই রয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর