মঙ্গলবার, ২০ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঢাকায় আসতে শুরু করেছে পশু

প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইজারাদাররা, বসবে ১৯ পশুর হাট ২৫ জুন থেকে আনুষ্ঠানিক হাট

হাসান ইমন

ঢাকায় আসতে শুরু করেছে পশু

আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষে রাজধানীতে ১৯টি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। হাটগুলোতে এরই মধ্যে পশু আসতে শুরু করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে ২৫ জুন থেকে হাট শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এবার আগেই আসছে পশু। তবে এখনো পশু বাঁধার জন্য বাঁশের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে হাটগুলোতে। চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। গতকাল সাঈদনগর পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, খামারিরা আগাম পশু নিয়ে এসেছেন। জায়গা আগে বেছে নিয়ে তারা গরুর যত্ন করতে শুরু করেছেন। কিন্তু এত আগে এলেন কেন এটা ছিল অনেকের প্রশ্ন। কারণ হাট শুরু হবে আগামী ২৫ জুন থেকে। তাহলে হাট শুরুর ছয় দিন আগে কেন এলেন তারা। বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছিল আগাম আসা গরুর খামারিদের কাছে। গরুর হাটে আগাম গরু নিয়ে আসার কারণ হিসেবে খামারিরা জানালেন, যানজটের কারণে অনেক সময় গরু আনতে দেরি হয়। বেশি সময় ট্রাকে থাকলে গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক সময় মারা যায়। তাছাড়া হাটে ভালো জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এসব বিষয় মাথায় রেখে এবার তারা আগে এসেছেন। কুষ্টিয়া থেকে আসা গরু বিক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, ‘এবার একটু আগেই চলে এসেছি। কারণ কয়েক দিন পর রাস্তায় যানজট শুরু হবে। এই যানজটের কারণে গরুর দীর্ঘক্ষণ গাড়িতে থাকতে হয়। এতে গরু অসুস্থ হওয়াসহ নানান সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়া কয়েক দিন পর এলে হাটে জায়গা পাওয়া যায় না। আর যেসব জায়গা পাওয়া যায় সেখানে গরু রাখার পরিবেশ থাকে না। সে জন্য সব চিন্তাভাবনা করেই আগে গরু নিয়ে এসেছি।

পাবনার রুবেল জানান, তিনি দেশি ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রথম দিকে ক্রেতা ভালো পাওয়া যায়। দাম যা চাওয়া যায় তাই মিলে। এ ছাড়া হাটে দেরিতে এলে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়। আগে আসায় গরুর যত্ন করা যায়। আর সুন্দর করে থাকার জায়গাও করে নেওয়া যায়। এসব ভেবে তিনি আগাম এসেছেন।

সাঈদনগর গরুর হাটটিতে গতকাল ৮০-১০০টি গরু উঠতে দেখা গেছে। বিক্রেতাদের গরুর পরিচর্যা করতে দেখা গেছে। তবে এখনো বিক্রি শুরু হয়নি। তবে হাটটিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ। একই অবস্থা পোস্তগোলা শশ্মানঘাট হাটের। গতকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছে পশু। তবে এখনো হাটটির প্রস্তুতির কাজ চলছে। মেরাদিয়া হাটটিতেও চলছে প্রস্তুতির কাজ। এর মধ্যে লাইটিংসহ বাকি কাজগুলোও আগামী দু-একদিনেই শেষ হবে। ইতোমধ্যে এ হাটে গরু বাঁধার জন্য বাঁশের খুঁটির কাজও শেষের দিকে। পুরো মাঠে ত্রিপল লাগানো হয়েছে, যাতে বৃৃষ্টিতে কোনো পশু না ভিজে যায়। তবে হাটের প্রচার বাড়াতে বনশ্রী, রামপুরা, খিলগাঁও, বাসাবো, গোড়ান, নন্দীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সুবিশাল সব তোরণ স্থাপন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার-ফেস্টুন। কোরবানির হাটের প্রস্তুতির ব্যাপারে মেরাদিয়া হাটের ইজারাদার আওরঙ্গজেব টিটু বলেন, হাটের সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এখন বাঁশের খুঁটি বসানোর কাজ চলছে। তবে বাকি কাজগুলো শেষ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। আশা করছি, নির্ধারিত সময়ের আগেই সব কাজ শেষ করতে পারব। এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন বলেন, ঈদের দিনসহ মোট পাঁচ দিনের জন্য অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এর বাইরে হাট বসানোর সুযোগ নেই। আগে কেউ পশু নিয়ে এলেও বিক্রি করতে পারবে না। তিনি বলেন, সীমানার বাইরে এবং রাস্তার পাশে হাট বসানো যাবে না। এরকম অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নেব। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় অস্থায়ী ৯টি হাটের মধ্যে ৭টি চূড়ান্ত হয়েছে। বাকি দুটি (মঙ্গলবার) আশা করি চূড়ান্ত হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৮টি অস্থায়ী হাট বসবে। এর বাইরে গাবতলী স্থায়ী হাটটিতেও পশু বেচাকেনা হবে। এ ছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় অস্থায়ী ৯টি হাট বসবে। এর বাইরে সারুলিয়া স্থায়ী হাটটিতেও পশু বেচাকেনা হবে।

সর্বশেষ খবর