পাটকাঠি থেকে ছাপার কালি উদ্ভাবন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ড. মো. আবদুল আজিজের নেতৃতাধীন একদল গবেষক। এ কালি বাজারে থাকা কালির চেয়ে উন্নতমানের, দামে সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং বিকল্প ব্যবহারযোগ্য। এ কালি ব্যবহারে বিদেশ থেকে কালি আমদানির অর্থ সাশ্রয় হবে। এ ছাড়া এ কালি মুদ্রণশিল্প থেকে উৎপন্ন ক্ষতিকর গ্যাস কমাবে বলে জানান তাঁরা। কেমিস্ট্রি-এন এশিয়ান জার্নালে সম্প্রতি তাঁদের এ উদ্ভাবনী গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে নিজেদের আবিষ্কারের বিষয়ে এসব তথ্য তুলে ধরেন গবেষক ড. আবদুল আজিজ। তরুণ এই রসায়নবিজ্ঞানীর বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের মোমিনপুর গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর, দক্ষিণ কোরিয়ার পুশান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ন্যানোম্যাটেরিয়াল বেইজড ইলেকট্রো অ্যানালাইটিক্যাল কেমিস্ট্রি’তে পিএইচডি করেন। ইতোমধ্যে ড. আজিজের ১৯০টি গবেষণাকর্ম বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ন্যানোম্যাটেরিয়াল এবং কার্বনাসিয়াস পদার্থের প্রস্তুতি, স্থিরকরণ ও কার্যকরকরণ এবং রাসায়নিক ও জৈব রাসায়নিক সেন্সর, জলের অক্সিডেশন, সুপারক্যাপাসিটর, ব্যাটারি প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করেন। ড. আবদুল আজিজ বলেন, পাটকাঠি থেকে প্রাপ্ত সাবমাইক্রন কার্বনকণা ব্যবহার করে এ ‘ইঙ্কজেট’ বা ছাপার কালির একটি জলভিত্তিক ফরমুলেশন তৈরি করা হয়েছে। এ কালি উদ্ভাবনের পর প্রিন্টারে ব্যবহার করে বাণিজ্যিক ইঙ্কজেট কালো কালির মতো কার্যকারিতা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, ‘গবেষণাকালে তাঁরা বায়োমাস, পাটকাঠিগুলোকে পাইরোলাইজ করার জন্য একটি কাস্টমাইজড পাইলট ফার্নেস ব্যবহার করেছেন, যা জ্বালানি হিসেবে উৎপন্ন গ্যাসগুলোক পুনর্ব্যবহার করে। সাবমাইক্রন কার্বনকণা তৈরির জন্য প্রাপ্ত কার্বনকে আরও বল-মিল করা হয়েছে। এ কণাগুলো জলভিত্তিক ইঙ্কজেট কালি তৈরি করতে বায়োকম্প্যাটিবল ইথিলিন গ্লাইকোল এবং আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহলের জলীয় দ্রবণে দ্রবীভূত হয়।’