সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ধসের শঙ্কা, পাহাড় এখন ভয়ংকর

প্রতিদিন ডেস্ক

প্রবল বর্ষণের মুখে রাঙামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামের পাহাড়গুলো ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে রাঙামাটিতে পাহাড় ধস শুরু হয়েছে, বান্দরবানে পাহাড় ধসে গতকাল ছয়জন আহতও হয়েছেন। পাশাপাশি চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া শুরু হয়েছে। এ সংক্রান্ত খবর পাঠিয়েছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা।

রাঙামাটি : টানা বৃষ্টিতে পাহাড় আবারও ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে পাহাড় ধসে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়েছে ভেদভেদী, রাঙাপানি, বনরূপা, তবলছড়ি, বিজার্ভ বাজার ও আসামবস্তি এলাকা। ফলে অন্ধকারে রয়েছেন রাঙামাটির শহরবাসী। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে লোকজনকে। ধস আতঙ্কের মুখে প্রশাসন থেকে পাহাড়ে পাহাড়ে মাইকিংও করা হচ্ছে। মাঠে নামানো হয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দল।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, টানা বর্ষণে রাঙামাটিতে পাহাড় ধস শুরু হয়েছে। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে আছরে পড়ছে পাহাড়ের পাথুরে মাটি। এতে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় সময়ই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সড়কে ভাঙনও শুরু হয়েছে।

শহরের ভেদভেদী এলাকার রাঙাপানি মৌজার সড়ক ভেঙে যাওয়ায় ধসে পড়েছে বৈদুতিক খুঁটি। রাঙামাটি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুর রহমান জানান, রাঙাপানি এলাকায় সড়কের পাশের মাটি ধসে যাওয়ায় ৩৩ হাজার লাইনের একটি খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংস্কার কাজ চলছে। দ্রুত মেরামত কাজ শেষ হলে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হবে। বান্দরবান : ভারী বর্ষণে বান্দরবান জেলায় পাহাড় ধসে ছয়জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে সদরে আহত হয়েছেন দুজন। তারা হলেন- রুমি আক্তার (২৮) এবং মো. রিদুয়ান (১৯)। সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদরের কালাঘাটা বীর বাহাদুর নগর এলাকায় পাহাড় ধসে আহত হওয়া রুমি আক্তারকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘণ্টাখানেক পর সদরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডভুক্ত স্টেডিয়াম এলাকায় আবার পাহাড় ধসের ঘটনায় স্থানীয়রা মো. রিদুয়ানকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। দুজনের চিকিৎসাসেবা চলছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার রোমেন শর্মা জানান, উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নে পাহাড় ধসে একই পরিবারের শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, সদর উপজেলায় ৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরকারিভাবে ১২৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তিনি জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও পানীয়ের ব্যবস্থা এবং মেডিকেল টিমকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ৮০০ পরিবারকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়। শনিবারও ২৫০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছিল। গতকাল আকবর শাহ এলাকার বিজয়নগর, ঝিল-১, ২, ৩, শান্তিনগর ও বেলতলীঘোনা এলাকা থেকে ৫০০ পরিবারকে সরানো হয়। এ ছাড়া মতিঝর্ণা এলাকা থেকে সরানো হয় ৩০০ পরিবারকে। দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে তাদের নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্র জানায়, পাহাড়ে  ঝুঁকিপূর্র্ণভাবে বসবাসরত পরিবারকে সরানোর জন্য ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাহাড় ও মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কয়েকটি টিম কাজ করছে। প্রতিদিন মাইকিং করে মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরে যেতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর