বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
দুই খুনের রহস্য উদঘাটন

শিক্ষক খুনের তদন্ত ভিন্ন খাতে নিতে চিরকুট সমকামিতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর অদূরে সাভারের ভাটপাড়ায় গোলাম কিবরিয়া (৪৩) নামের এক শিক্ষক খুনের ঘটনায় পরিকল্পনাকারীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। সোমবার রাতে র‌্যাব-৪, ৬ ও ১৩ যৌথ অভিযান চালিয়ে যশোর, ঝিনাইদহ ও রংপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছে ইমন খান (২৩), মো. সাগর (২২) ও ছাদেক গাজী (২২)। এ সময় লুট করা ৫ লাখ ২১ হাজার ৯৯ টাকা উদ্ধার করা হয়। শিক্ষক গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার পর লাশের পাশে থাকা চিরকুট ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

গতকাল কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে খুনের রহস্যের বিষয়টি অবহিত করেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেন, ইমনের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। সাগর একজন অটোরিকশাচালক। নিহত শিক্ষক মাঝেমধ্যে তার রিকশায় যাতায়াত করার কারণে দুই বছর আগে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। ছয় মাস আগে সাগর তার বন্ধু ইমনকে শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরিচয়ের সুবাধে ইমন ও সাগর শিক্ষক কিবরিয়ার বাসায় মাঝেমধ্যে যাওয়া আসা করতো। তিনি আরও বলেন, সাগর ও ইমন শিক্ষকের বাসায় যাওয়া আসার সুবাধে শিক্ষকের টাকা-পয়সা তাদের নজরে আসে। পরে তারা শিক্ষককে হত্যা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ইমন তার পরিকল্পনার বিষয়টি ঘটনার সাত দিন আগে ছাদেককে জানায়। বিভিন্ন জায়গায় ঋণ থাকায় ছাদেক এই পরিকল্পনায় সম্মতি দেয়।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ছাদেক নিজ হাতে একটি চিরকুট লিখে মৃতদেহের পাশে রেখে দেয়। ইমন নিহতের বিছানার নিচ থেকে চাবি নিয়ে আলমারি খুলে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, চারটি মোবাইল নিয়ে যায়। লুট করা টাকার বিষয়ে কমান্ডার মঈন বলেন, ইমন সাগরকে ৫০ হাজার টাকা দেয়। বাকি ৬ লাখ টাকা ইমন ও ছাদেক নিজেদের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে নেয়। ঘটনার পরদিন সকালে গ্রেফতার এড়াতে ইমন প্রথমে গাজীপুর পরে যশোরের চৌগাছা, সাগর রংপুরের মিঠাপুকুর, ছাদেক ঝিনাইদহে তাদের আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপন করে।

গত ২০ আগস্ট সাভার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভাটপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে হাত-পা বাঁধা এবং গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় গোলাম কিবরিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় লাশের পাশ থেকে ‘এই ব্যক্তি সমকামিতা করে পুলিশ ভাই, আমরা তাই মেরে ফেলেছি। ভাই, ও অবৈধ কাজ করে আমরা ইসলামের সৈনিক’ লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে সাভার থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর