বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা
দুই খুনের রহস্য উদঘাটন

কক্সবাজারে আওয়ামী লীগ নেতা খুনে শারীরিক সম্পর্ক ব্ল্যাকমেলিং

কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারে আবাসিক হোটেল কক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুদ্দিনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার নেপথ্যে ‘নৈতিক স্খলন জনিত অপরাধ’ ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, নৈতিক স্খলন জনিত কারণে অনৈতিক একটি সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন সাইফুদ্দিন ও আটক আশরাফুল ইসলাম। যার কিছু অংশ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়। আর এ সম্পর্কের ক্ষেত্রে টাকা বিনিময়ের একটা চুক্তি ছিল। চুক্তি মতে টাকা পরিশোধ না করা, ভিডিও ধারণ করায় প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে উঠে হত্যাকা টি সংঘটিত করেছে আশরাফুল। আশরাফুল ইসলামকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি জানান, সাইফুদ্দিন ও আশরাফুলের পরিচয় এক সপ্তাহের। পরিচয়ের সূত্র ধরে মোবাইল ফোনে আলাপ, ফেসবুকে কথা বলার পর ২০ আগস্ট দুজন প্রথম দেখা করে। সাইফুদ্দিন তার মোটরসাইকেলের পেছনে বসিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। এক পর্যায়ে পেয়ারা ও চোলাই মদ নিয়ে বিকালে দুজন হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে যান। ওখানে অনৈতিক সম্পর্কটি হয়। এরপর হোটেল থেকে বের হয়ে দীঘির পাড় এলাকায় আসেন। এরপর আশরাফুলকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে একশ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলেন। টাকার বিষয়টি নিয়ে তর্ক হলেও আশরাফুল চলে যায়। এরপর সাইফুদ্দিন হোটেলে ফিরে যান এবং ঘণ্টা খানেক পর আশরাফুলকে ফোন করে হোটেলে আসতে বলেন এবং না এলে ভিডিও প্রচারের হুমকি দেন উল্লেখ করে এসপি বলেন, আশরাফুল আসার সময় চাকু সঙ্গে নিয়ে আসে। কক্ষে প্রবেশ করে দুজন তর্ক এবং হাতাহাতিতে জড়িয়ে যান। এতে আশরাফুল উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করলে সাইফুদ্দিন পড়ে যান। ওই সময় বালিশ ও বিছানার চাদর নিয়ে মাথা চেপে ধরে এবং সাইফুদ্দিনের প্যান্টের বেল্ট দিয়ে হাত বেঁধে দেন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর আশরাফুল সাইফুদ্দিনের মোবাইল ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে বের হয়ে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। পুলিশ সুপার বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পুলিশ আশরাফুল ইসলামকে আটক করে। আশরাফুলের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত চাকু, মোবাইল এবং মোটরসাইকেলের চাবি একটি নর্দমা থেকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করেছে। সাইফুদ্দিন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সোমবার সকালে শহরের আবাসিক হোটেল সানমুনের দ্বিতীয় তলার ২০৮ নম্বর কক্ষ থেকে হাত বাঁধা ও রক্তাক্ত সাইফুদ্দিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আশরাফুল দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকার একটি মাদরাসার ছাত্র এবং তার পিতা একজন জেলে। স্থানীয়দের দাবি তার পরিবার রোহিঙ্গা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর