শনিবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

সময়মতো নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে

বজলুর রশীদ ফিরোজ

সময়মতো নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সময়মতো হবে বলে মনে হচ্ছে না। এমন মুখোমুখি অবস্থান থাকলে একতরফা নির্বাচন আওয়ামী লীগ করতে পারবে না। দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে যাবে। নির্বাচন ২০০৭ সালের মতো পিছিয়ে যেতে পারে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকার ছাড়া আমরাও নির্বাচনে যাব না।

তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আওয়ামী সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাব না, এটা বাম জোটের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না। ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত হয়নি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে জনগণের ভোটাধিকার সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। একবার ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গেছে। ২০১৮ সালে তো দিনের ভোট রাতে করে তারা ক্ষমতা দখল করেছে। এজন্য আমরা বলছি নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। অন্যদিকে সরকার বলছে সংবিধানের বাইরে যেতে পারবে না। রাজনৈতিক সমঝোতা হলে সংবিধানের মধ্যে থেকেও নির্দলীয় তদারকি সরকার দেওয়া সম্ভব। আওয়ামী লীগ থেকে যদি ১২-১৫ জন এমপি পদত্যাগ করে, এবং সেখানে উপনির্বাচন দিয়ে সব দল থেকে প্রস্তাব নিয়ে নির্দলীয় ১২-১৫ জনকে এমপি বানিয়ে আনলে তাদের দিয়ে গ্রহণযোগ্য তদারকি সরকার গঠন সম্ভব।

বাসদের এই নেতা বলেন, মানুষ এখন ভোট দিতে পারে না। তাই ভোটের প্রতি আর আস্থাও নেই। সর্বশেষ ঢাকা-১৭ আসনে যে উপনির্বাচন হলো তাতে মাত্র ১১.৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে। হিরো আলম না দাঁড়ালে ভোট ৪-৫ শতাংশে নেমে আসত। অর্থাৎ সরকারি দলের সমর্থকরাই কেন্দ্রে যায় না। এজন্য আমরা দাবি করছি, মানুষকে কেন্দ্রে ফিরিয়ে আনতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন। একই সঙ্গে একটা প্রতিনিধিত্বশীল পার্লামেন্ট গঠন করতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছি। এ পদ্ধতিতে আমরা বলি ১ শতাংশ ভোট পেলে সংসদে ৩টি আসন পাবে। সেখানে প্রার্থী নয়, শুধু মার্কা থাকবে। মার্কায় প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন হবে। এখন আওয়ামী লীগ ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে সরকার গঠন করে ফেলে। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে ৪০ শতাংশ ভোট পেলে আসন পাওয়ার কথা ১২০টি। অর্থাৎ, সামগ্রিক ভোট বিচার করলে সরকার গঠনের মতো আসন তারা পায় না। তখন অন্য দলের সমর্থন দরকার। অন্য দলের সমর্থন নিতে হলে তাদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে হবে। তখন সরকার যা ইচ্ছা তা করতে পারবে না। এখন নেপাল, শ্রীলঙ্কা, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডসহ পার্লামেন্টারি সরকার থাকা ১০০ দেশের মধ্যে ৯৫টিতে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন হয়।

সর্বশেষ খবর