সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদেশ গিয়ে নিখোঁজ নেত্রকোনার ১৪ যুবক

জীবিত অথবা মৃত উদ্ধারে পরিবারের আহাজারি

আলপনা বেগম, নেত্রকোনা

সংসারের উন্নয়ন ঘটাতে দালালদের খপ্পরে পড়ে নেত্রকোনার কলমাকান্দার ১৪ যুবক লিবিয়ায় পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন। এদিকে গত দেড় বছর ধরে নিখোঁজদের অপেক্ষায় থেকে মা, স্ত্রী সন্তানসহ স্বজনেরা দিশাহারা। অবশেষে সন্তানের খোঁজে রহিমা খাতুন নামের এক মা আদালতে মানব পাচার আইনে মামলা করেছেন। কিন্তু স্থানীয় দালালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিদেশ যাওয়ার সময় বিকাশে টাকা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করলেও দালালদের ব্যাপারে কিছুই জানে না দাবি দোকানীর। এদিকে বিদেশ পাঠাতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সহায়-সম্বলহীন স্বজন হারানোদের দাবি- জীবিত অথবা মৃত স্বজনদের উদ্ধার এবং দালালদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার।

সরেজমিন জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম ফকির চান্দুয়াইল, চান্দুয়াইল ও পাঁচ কাঠাসহ নিখোঁজ এবং দালালদের বাড়ি ঘুরে জানা গেছে, চান্দুয়াইল গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী ইব্রাহীম ও ইতালি প্রবাসী মো. সাদেকুলের সহায়তায় স্থানীয় দালালের মাধ্যমে ২০২২ সালে আলমগীর, রাকিব, সালমান, কাসেম, শাহিন মিয়া, ফিরোজসহ কয়েকটি গ্রামের মোট ১৪ জন লিবিয়া যায়। সেখানে দুই মাসের মতো অবস্থান করে সাগরপথে ইতালি যাওয়ার দিন স্বজনদের সঙ্গে শেষ কথা বলে নিখোঁজ হন তারা। দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজদের পরিবারগুলো সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশাহারা। অসুস্থ হয়েছেন বাবা-মা। স্ত্রী-সন্তানেরা খুঁজে ফিরছে লাশ অথবা প্রিয় মানুষটিকে।

অবশেষে চান্দুয়াইল গ্রামের সন্তানহারা রহিমা খাতুন দালালদের শাস্তির দাবিতে ১১ জনের নামে আদালতে মামলা করেছেন। তবে লিবিয়া প্রবাসী ইব্রাহীমের মা জহুরা খাতুন জানান, তার ছেলে লিবিয়া থেকে সৌদি চলে গেছে। এসব বিষয়ে তিনি সাদেককে দোষারূপ করেন। অন্যদিকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ইতালি প্রবাসী মনজুরুলের ঘরজামাতা সাকিব খান জানান, এটি ইব্রাহীমের কাজ। লোভে পড়ে যুবকরা গেছেন। তাদের তিনিও তখন নিষেধ করেছিলেন।

পাঁচ কাঠা পশ্চিম বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী মো. জামাল মিয়া ৭ লাখ টাকা মাসুমের কথায় পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করলেও কারা কীভাবে নিয়েছে তা জানেন না বলে জানান।

পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটির অনুসন্ধান চলছে।

অন্যদিকে জনশক্তি ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মো. লেহাজ উদ্দিন জানান, সরকার ২০১৮ সাল থেকে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিণœ দেশে ৫৩ হাজার মানুষ পাঠিয়েছে। কারোর কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু লোভে পড়ে দালালের মাধ্যমে গেলে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমাদের এখানে বৈধভাবে প্রবাসী অ্যাপসের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে পাঠানো হয়। তারা কোনো দিন প্রতারিত হয় না।

সর্বশেষ খবর