সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রতি ডেঙ্গু রোগীতে সরকারের ব্যয় ৫০ হাজার টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত একজন রোগীর জন্য সরকারের গড়ে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যয় করেছে সরকার।

গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ডেঙ্গু মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সরকারি হাসপাতালে ৭০ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আর বাকি ৩০ শতাংশ রোগী বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। আবার অনেকে শুধু ওষুধেই সুস্থ হয়ে যান।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়হীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন ও চিকিৎসা নিয়ে এখানে কাজ করছি, কাউকে দোষারোপ করার জন্য নয়। আমরা কাউকে দোষ দিচ্ছি না। ডেঙ্গু সুরক্ষায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার কাজ নয়। স্থানীয় সরকার, পরিবেশসহ অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্ব রয়েছে।’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা। তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে টিকা এখনো ট্রায়াল পর্যায়ে রয়েছে। তাই এখন মশক নিধনে জোর দিতে হবে। এডিস মশার বংশবিস্তারের উৎস ধ্বংস করতে হবে। 

জাহিদ মালেক বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বেশি পুরুষরা হলেও মৃত্যু বেশি নারীদের। মোট মৃত্যুর ৬৫ ভাগই নারী। চিকিৎসার প্রতি অবহেলার কারণে তাদের মৃত্যুহার বেশি। তাই নারীদের চিকিৎসার প্রতি আমাদের আরও যত্নবান হতে হবে। যারা দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসছেন, তারাই বেশি মারা যাচ্ছেন। পাশাপাশি যারা একাধিকবার আক্রান্ত হন, তাদের মৃত্যুহার বেশি। এডিস মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ওষুধের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, মশা নিধনে যেভাবে ডোবা-নালায় স্প্রে হওয়া দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। স্কুলেও অনেক শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু সেখানে ঠিকমতো হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। পাশাপাশি কল-কারখানায় যাতে নিয়মিত ¯েপ্র হয়, সেটি তদারকি করতে হবে। যেসব মশা জন্মাচ্ছে, সেগুলো নিয়েও গবেষণা হওয়া দরকার। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, মানুষের আচরণগত পরিবর্তন অনেক কঠিন কাজ। পাশাপাশি প্রয়োজন লজিস্টিক সহযোগিতা। সরকারি প্রতিষ্ঠানে সব সময়ই কিছু ঘাটতি থাকে, সেটা মোকাবিলা করার চেষ্টা চলছে। সময়মতো মশা নিধন, জনসম্পৃক্ততা বাড়ানো না গেলে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, পরিচালক (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণলায় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা।

সর্বশেষ খবর