সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৩ ০০:০০ টা

ফাঁদ পেতে যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশের তরুণীদের ছবি সংগ্রহ

মার্কিন দূতাবাসের জিডির পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইনে ফাঁদ পেতে যুক্তরাষ্ট্রসহ তিন দেশের কিশোরীদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে প্রতারণার অভিযোগে মো. সামির নামে এক তরুণকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। ২১ আগস্ট খুলনার বাসা থেকে মো. সামির (২৯) নামে ওই তরুণকে গ্রেফতার করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের করা একটি সাধারণ ডায়েরির (জিডি) তদন্ত করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। খুলনায় বসে এ কাজটি করে আসছিলেন সামির। তার হেফাজত থেকে বিভিন্ন দেশের অন্তত ২০-৩০ জন তরুণীর শতাধিক নগ্ন ছবি উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাইকেল লি গত ২৬ জুলাই গুলশান থানায় একটি জিডি করেন। ভিকটিম কিশোরীর মায়ের যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুলশান থানায় ওই জিডি করা হয়। ঘটনার রহস্য উন্মোচনের পর ২১ আগস্ট মার্কিন দূতাবাসের লি বাদী হয়ে মো. সামিরকে আসামি করে গুলশান থানায় ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, গত মার্চে সামির পরিচয়ে বাংলাদেশের এক নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে প্রলুব্ধ করে তাকে দিয়ে তার পর্নো ছবি তুলে নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওই কিশোরীর সঙ্গে ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে সামিরের যোগাযোগ ও সম্পর্কের একপর্যায়ে তিনি ওই অ্যাপ এবং তার ই-মেইলে কিশোরীর তোলা পর্নো ছবি নিয়ে নেন। এ ব্যাপারে ডিএমপি কমিশনার সিটিটিসিকে জিডি তদন্তের দায়িত্ব দেন। জিডির তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্তের একপর্যায়ে ২১ আগস্ট খুলনার সোনাডাঙ্গার বাসা থেকে মো. সামির (২৯) নামে ওই তরুণকে গ্রেফাতর করা হয়। পরে আদালতের অনুমতিতে তাকে দুই দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আদালতের নির্দেশে শনিবার সামিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সিটিটিসি সূত্র জানিয়েছে, সামির অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের অ্যাপ ডিসকর্ডে এসব কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর ফাঁদে ফেলে তাদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করেন। ইতোমধ্যে সামিরের আটটি ডিসকর্ড অ্যাপের সন্ধান পাওয়া গেছে। সামিরের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ পরীক্ষা করে সিটিটিসির ফরেনসিক বিভাগ যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ছাড়াও উত্তর আমেরিকার অন্তত ৩০ জন কিশোরীর শতাধিক পর্নো ছবির সন্ধান পায়। তদন্তে সিটিটিসি জানতে পেরেছে, রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সামির। ২০২১ সালে রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও করোনার সময় থেকে আর ক্লাস করেননি। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে মা-বাবা তাকে বাইরে কোথাও যেতে দিতেন না। আর এ একাকিত্বের কারণে মোবাইল ফোনে তার আসক্তি তৈরি হয়ে বিকৃত মানসিকতা গড়ে ওঠে।

সর্বশেষ খবর