নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ২৭ আগস্ট ঘটলেও গতকাল দুপুরে এ ঘটনায় ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ধর্ষিতাকে নারায়ণগঞ্জের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকার ২৫ বছর বয়সী ওই গৃহবধূর পাঁচ বছর আগে শেখ ফরিদের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের আগে ওই গৃহবধূর পরিবার জানত না সে একজন মাদকসেবী। বিয়ের পর থেকে ফরিদ মাদকের টাকার জন্য গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করত। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিচার সালিশ হলেও ফরিদের পরিবর্তন হয়নি। অবশেষে বাধ্য হয়ে ওই বছরই কাজী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শেখ ফরিদকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে। এর এক বছর পর পারিবারিকভাবে কালাপাহাড়িয়ার এক যুবকের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন। পরবর্তীতে শেখ ফরিদ ওই গৃহবধূর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে ফোনে ভয়ভীতি দেখানোসহ বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। গত রবিবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাড়ির পাশের রাধানগর বাজারের ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনার জন্য বের হলে রাস্তায় প্রাক্তন স্বামী শেখ ফরিদ দেখে ডাক দেয়। ডাকে সাড়া না দিলে শেখ ফরিদ তার মুখ চেপে ধরে অন্যান্য সহযোগী রাধানগর গ্রামের আ. লতিফের ছেলে মো. হালিম, নোয়াব মিয়ার ছেলে মো. মজিবুর, এসেন মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া ও আফাজদ্দিনের ছেলে আ. কাদির তাকে উঠিয়ে মেঘনা নদীর ঘাটে নিয়া যায়। সেখান থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মাঝ নদীতে নিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। স্ত্রীর খোঁজে বন্ধুকে নিয়ে ওই রাতেই তার স্বামী নদীর ঘাট এলাকায় গেলে ধর্ষণকারীরা তাকে ট্রলারে তুলে নদীর মাঝ খানে নিয়ে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে ফেলে আসে। পরে সেখান থেকে এসে স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল থানায় মামলা না করে মীমাংসা করার জন্য চাপ দিতে থাকে এবং ধর্ষিতার পরিবারকে নজরবন্দি করে রাখে। পরে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বলে গতকাল থানায় আসে। ধর্ষিতার স্বামী বাদী হয়ে ওইদিন দুপুরে থানায় মামলা করেন। আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব জানান, মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে।
