শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা
সরকারি কৃষি কল সেন্টার

বেড়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোন, বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত সেবাপ্রার্থীরা

ওয়াজেদ হীরা

সরকারি কৃষি কল সেন্টারে বেড়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোন, প্রশ্ন করা হচ্ছে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে। ফোন করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জানতে না চেয়ে কেউ নাম ঠিকানা চাইছেন, কেউ প্রেমালাপ করতে অনাকাঙ্ক্ষিত নানা কথা বলছেন। এসব ঘটনা প্রায়ই ঘটছে কৃষি তথ্য সার্ভিসের অধীন কৃষি কল সেন্টারে। এ কারণে কল সেন্টার অনেক সময় ব্যস্ত থাকছে এবং প্রকৃত সেবাপ্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।

কৃষিবিষয়ক প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা দিতে ২০১২ সালের জুনে চালু করা হয় কল সেন্টারটি। ‘১৬১২৩’ নম্বরটিতে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন অফিস সময়ে ফোন করে কৃষকরা বিভিন্ন তথ্যসেবা পাচ্ছেন। কলদাতার প্রতি মিনিটে মাত্র ২৫ পয়সা খরচ হয়। কিন্তু কৃষকদের ফোন ছাড়াও সম্প্রতি বেড়েছে অপ্রাসঙ্গিক ফোন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সাতজন কর্মীর মধ্যে প্রত্যেকেই নারী কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে কল সেন্টারে কর্মরত এক নারী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অনেকেই ফোন দেন ফসলের নানা বিষয়ে। ইদানীং আমরা এমন কল পাচ্ছি যা বলতেও লজ্জা লাগে। কেউ ফোন করে কথা বলে না, কেউ শীষ বাজায়, কেউ প্রেমালাপ করতে চায়, ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করে। শরীর ভালো কি না, সকালে কী খেয়েছি ইত্যাদি অপ্রাসঙ্গিত আলোচনা করতে চায়। প্রতিদিন ৩ শতাধিক কল আসে, আর সেখানে ৩০-৪০টি অনাকাঙ্ক্ষিত কল পাচ্ছি।’ আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেকেই দুষ্টুমি করার জন্য ফোন করেন, যেহেতু মিনিটে মাত্র ২৫ পয়সা খরচ হয়। কিন্তু যারা দুষ্টুমি করছেন তারা হয়তো এটা বুঝতে পারছেন না যে, কাজটা ঠিক নয়। এটা সরকারি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। অনেক ফোন ধরে আমরা বাচ্চাদের কণ্ঠ পাই, হয়তো বাচ্চার হাতের চাপ লেগে ফোন চলে এসেছে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোনে আমরা প্রত্যেকেই বিরক্ত। এসব কলের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে ২৮ আগস্ট অন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনাও করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।’ কৃষি তথ্যসার্ভিসের (এআইএস) পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায় বলেন, ‘সব কলই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কে কল করেছে রিসিভ না করলে বোঝা যায় না। সম্প্রতি অনাকাঙ্ক্ষিত ফোন অনেক বেড়েছে। আমাদের নারী কর্মকর্তাদের কাছে অযাচিত প্রশ্ন করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। কৃষকদের সেবা দেওয়ার জন্য এ কল সেন্টার, যারা খুচরো বাড়তি কথার জন্য বা অযাচিত আলোচনার জন্য ফোন দেন, তাদের নিজেদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কারা ফোন দেন, সে নম্বর সার্ভারে থাকে, আমরা প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেব। এ ছাড়া সামনের দিনে কৃষকের সুবিধার্থে কয়েকদিনের মধ্যেই চ্যাটজিপিটি আনা হচ্ছে।’ কৃষি তথ্যসার্ভিসের তথ্যানুযায়ী, ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৫ বছর ১০ মাস ১৭ দিনে কৃষি কল সেন্টারে কল এসেছে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৩৯৮টি। এগুলোর মধ্যে ২ লাখ ২২ হাজার ১৬৩টি কলের জবাব দিয়েছেন কর্মীরা। ১ লাখ ৯৫ হাজার ২৪৮টি কল ধরাই হয়নি। এ ছাড়া নির্ধারিত সময় (৩০ সেকেন্ড) শেষ হওয়ার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে ৬ লাখ ৮১ হাজার ৫৭২টি কলের।

সর্বশেষ খবর