ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শিকলবন্দি জীবন পার করছেন অন্ধ মা ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলে। ১০ বছরের আবদুর রহমান বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বলে মা রহিমা বেগম কোমরের সঙ্গে তাঁর শিকল দিয়ে ছেলেকে বেঁধে রেখেছেন। আর সেই প্রতিবন্ধী ছেলের চোখ দিয়েই রহিমার পথচলা। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে তাদের খাবার জোগাড় হয়। জানা গেছে, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের জয়নাল হোসেনের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে রহিমা বেগমকে প্রথমে পারিবারিকভাবে পাশের গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় রহিমা বেগমের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়। সংসারও ভেঙে যায়। এরপর একই ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের হতদরিদ্র ভ্যানচালক ছালাম হোসেন অন্ধ রহিমাকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে তার একটি ছেলে হয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, ছেলেটি বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। বিষয়টি দেখার পর ছালামও তাঁকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যান। হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে মা ১০ বছরের ছেলেটিকে তাঁর কোমরের সঙ্গেই শিকলে তালাবন্দি করে রাখেন। জীবনের তাগিদে কোনো উপায় না থাকায় ছেলেকে নিয়ে শহরে ভিক্ষা করে বেড়ান।
কয়েকদিন আগে রহিমা অসুস্থ হয়ে পড়লে আশ্রয় নেন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে হাসপাতালের মেঝেতে শিকলবন্দি অবস্থায় মা-ছেলেকে শুয়ে থাকতে দেখে আগত অনেকের হৃদয় স্পর্শ করে। তারা অনেকে মোবাইলে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই পোস্ট দেখে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ। তিনি মা-ছেলের জন্য শয্যা, কাপড়সহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।