বুধবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

২৮ অক্টোবর পুলিশ হত্যায় নেতৃত্বদানকারী গ্রেফতার : সিটিটিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে নয়াপল্টনে কনস্টেবল আমিরুল হক পারভেজ হত্যাকান্ডে আমানউল্লাহ আমান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার আমানউল্লাহ আমান ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব। তিনি হত্যাকান্ডে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। গত সোমবার বিকালে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ২৮ অক্টোবর সমাবেশকেন্দ্রিক দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর ফকিরাপুলের বক্স কালভার্ট রোড এলাকায় হামলায় নিহত হন পুলিশ সদস্য আমিরুল ইসলাম পারভেজ (৩২)। তিনি কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় ২৯ অক্টোবর পল্টন থানায় হত্যা মামলা করে পুলিশ।

সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা ছিল, পুলিশের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস হামলা করতে হবে। হামলার মাধ্যমে পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে হবে। এক বা একাধিক পুলিশ সদস্য হত্যার মাধ্যমে তারা দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। একটি নতুন ইস্যু সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। বিএনপি ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে মহাসমাবেশের দিন আমানউল্লাহ তার অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে কনস্টেবল আমিরুলকে হত্যা করেন। আসাদুজ্জামান বলেন, সমাবেশ কেন্দ্রিক দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের অবস্থান সম্পর্কে আগেই আমানউল্লাহ ও তার অনুসারীদের জানা ছিল। মহাসমাবেশের দিন কাকরাইলে উপস্থিত বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা করেন। এর জেরে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এই সুযোগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছের ভিক্টরি হোটেলের পাশের গলি দিয়ে আমানউল্লাহ ও তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর হামলা করার জন্য অগ্রসর হন। তারা পল্টন টাওয়ারের সামনে এসে দুটি দলে বিভক্ত হন। একটি অংশ বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে বিজয়নগর পানির ট্যাংকির দিকে যায়। অপর অংশ আমানউল্লাহর নেতৃত্বে বক্স কালভার্ট রোডের পূর্ব প্রান্তের দিকে এগিয়ে যায়। বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছানোর পর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সেখানে দায়িত্ব পালনরত পুলিশ সদস্যদের ওপরে অতর্কিত হামলা করেন। এ সময় পূর্ব প্রান্তের পুলিশ সদস্যরা বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হন। পশ্চিম দিকে অগ্রসরমান পুলিশ দলটির ওপর আমানউল্লাহর নেতৃত্বে হামলা হয়। হামলার এক পর্যায়ে ইটের আঘাতে পুলিশ কনস্টেবল আমিরুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তখন তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন হামলাকারীরা। আমিরুল জ্ঞান হারান। রক্তাক্ত অবস্থায় তার নিথর দেহ রাস্তায় পড়ে থাকে। সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান বলেন, হামলায় আমিরুলের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সারা শরীর গুরুতর জখম হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার নিথর শরীরের ওপরে বর্বরভাবে আঘাত করতে থাকেন হামলাকারীরা। আমিরুলের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর আমানউল্লাহ তার দলবল নিয়ে বক্স কালভার্ট রোডের পশ্চিম দিক দিয়ে চলে যান। গত সোমবার মহাখালী থেকে গ্রেফতারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমান এসব কথা স্বীকার করেছেন।

সর্বশেষ খবর